close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে রোডম্যাপ স্পষ্ট, নির্বাচন হবে সংস্কার পরবর্তীতে

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমানে সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় হলো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে দেশের প্রধান উপদেষ্টা ড
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমানে সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় হলো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে দেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা জাতীয় নির্বাচন নিয়ে উত্তপ্ত রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের শেষ দিকে অথবা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে এর আগে, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হলে দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করা প্রয়োজন। এছাড়া, গত ১৭ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে দেয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু হয়ে গেছে, এটি আর থামবে না।” তবে তিনি বারবার জোর দিয়ে বলেছেন, সংস্কার না হয়ে নির্বাচন হবে না। তাঁর এই বক্তব্যের পর দেশের রাজনৈতিক দলের নেতারা একে একে নির্বাচন প্রসঙ্গে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন, যেখানে সবারই একটাই দাবি—সংস্কারের পরই নির্বাচন হতে হবে। সংস্কার দাবিতে দেশজুড়ে গনজাগরণ এদিকে, দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এবং নাগরিক সমাজের নেতারা মনে করেন, নির্বাচনের আগে বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, সংবিধান ও অর্থনৈতিক খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা উচিত। তারা সতর্ক করে দিয়েছেন, যদি নির্বাচন হয়, কিন্তু সংস্কারের কাজ না হয়, তাহলে দেশে ফের ফ্যাসিবাদের উত্থান হতে পারে, যা দেশ ও জনগণের জন্য বিপজ্জনক হবে। গণতন্ত্র মঞ্চ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে, জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের মধ্যে করতে হলে, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করতে হবে।” একই দাবি করেছে ছাত্র-জনতার প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনও। তারা মনে করে, রাষ্ট্র সংস্কার না হওয়ার আগেই নির্বাচন হলে তা হবে এক অন্ধকার পথের সূচনা, এবং নতুন করে ফ্যাসিবাদ পুনরুদ্ধার হবে। গণমতামত: সংস্কার জরুরি ভয়েস অব আমেরিকার সম্প্রতি করা একটি জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৬১.১ শতাংশ মানুষ মনে করেন, আগামী এক বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত, তবে ৬৫.৯ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন কোনোভাবেই হতে পারে না। সেই সঙ্গে, জরিপের ফলাফলে উঠে এসেছে, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ, বিচার বিভাগ এবং সংবিধানে সংস্কারের পক্ষে জনমত ব্যাপকভাবে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ইউনূসের রূপরেখা: নির্বাচন হবে সংস্কারের পরেই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৬ ডিসেম্বর তার ভাষণে বলেছিলেন, “২০২৫ সালের শেষ দিকে বা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে নির্বাচন হতে পারে, তবে তা অবশ্যই সকল প্রধান সংস্কার শেষে।” তিনি সংস্কারের জন্য ছয়টি পৃথক কমিশন গঠন করেছেন এবং তাদের প্রতিবেদনের পর সিদ্ধান্ত গ্রহণের কথা বলেছেন। রাজনীতিকদের ভাষ্যে: দ্রুত সংস্কার শেষে নির্বাচন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা এবং বিশিষ্টজনরা একাধিকবার বলেছেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধেও আসা অভিযোগের বিচার করা এবং রাজনৈতিক সংস্কারগুলো দ্রুত শেষ করার পরই নির্বাচন হতে হবে। দেশে এখনও নির্বাচন নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি, তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে, প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও সংস্কারের পক্ষে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও ২৩ সেপ্টেম্বর এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করতে সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরই সমর্থন দেবেন। তবে পরবর্তীতে তিনি জানান, এটি তার ব্যক্তিগত মতামত এবং প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করবেন। আসন্ন নির্বাচন এবং সংশোধনের জন্য প্রস্তুতি রাজনীতিবিদরা আশা করছেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি দ্রুত হবে এবং জনগণের আকাক্সক্ষামূলক একটি প্রকৃত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সরকার ক্ষমতায় আসবে। এম সাখাওয়াত হোসেনসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পূর্বে সংস্কারের কাজ সম্পন্ন হবে এবং জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট জরিপ: জনগণের মতামত ভয়েস অব আমেরিকার জরিপে ৯৬.৫ শতাংশ উত্তরদাতা নির্বাচন কমিশন সংস্কারের পক্ষে, ৯২.৩ শতাংশ পুলিশ সংস্কারের পক্ষে, ৯৫.৩ শতাংশ বিচার বিভাগ সংস্কারের পক্ষে এবং ৯৬.৪ শতাংশ অর্থনৈতিক খাতে সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। জনগণ মনে করে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের শাসন ব্যবস্থা অনেক ভালোভাবে চলছে। সবশেষে, গণতন্ত্র, সংস্কার এবং নির্বাচনের ব্যাপারে সরকার এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা একে একে মন্তব্য করেছেন, এবং তাদের ভাষায়, যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
No comments found


News Card Generator