পবিত্র ভূমি মক্কা। এই নগরীতেই রয়েছে মুসলিম উম্মাহর কিবলা, যেখানে অবস্থিত কাবা শরিফ। যুগের পর যুগ এই পবিত্র স্থান এবং একে ঘিরে থাকা মসজিদ আল হারাম মুসলমানদের আত্মিক প্রশান্তির ঠিকানা হয়ে আছে। এবার পবিত্র রমজান মাসে এই মহিমান্বিত স্থানে চলছে ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ সম্প্রসারণ প্রকল্প।
দুবাইভিত্তিক ভিডিও সরবরাহকারী প্ল্যাটফর্ম ভায়োরি সম্প্রতি মসজিদ আল হারামের নতুন এক ভিডিও প্রকাশ করেছে। ড্রোন থেকে ধারণ করা সেই ভিডিওতে দেখা যায়, মসজিদটির তৃতীয় সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। নতুন এই সম্প্রসারণের ফলে একসঙ্গে ২০ লাখ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন। যেখানে একসময় সীমিত জায়গায় দাঁড়ানোর সুযোগ পাওয়া ছিল সৌভাগ্যের ব্যাপার, সেখানে এখন মুসল্লিদের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে প্রশস্ত আঙিনা ও আরামদায়ক চলাচলের পথ।
২০১১ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের আওতায় মসজিদের প্রবেশপথ ও বহির্গমন পথগুলো আরও প্রশস্ত করা হয়েছে, যাতে বিশাল জনসমাগমেও মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারেন। দীর্ঘ দুই দশকের মধ্যে এবারই প্রথম পবিত্র মসজিদের চত্বরে কোনো নির্মাণ কপিকল দেখা যাচ্ছে না। যেন দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই পবিত্র স্থান পূর্ণাঙ্গ সৌন্দর্য ফিরে পেয়েছে।
রমজানের শেষ দশকের জন্য মসজিদ প্রস্তুত করা হয়েছে আরও উন্নত সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে। ৪২৮টি এস্কেলেটর ও ২৮টি লিফট স্থাপন করা হয়েছে, যা মুসল্লিদের চলাচল আরও সহজ করবে। বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্ট নামাজের স্থান রাখা হয়েছে, পাশাপাশি শিশুদের দেখাশোনার জন্য চালু করা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার বিশেষ সেবা।
প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে একটাই আকাঙ্ক্ষা—একবার হলেও কাবা শরিফের সামনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায়ের সুযোগ পাওয়া। নতুন সম্প্রসারণ প্রকল্পের ফলে এখন আরও বেশি মানুষ এই স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।
গ্র্যান্ড মসজিদ বা মসজিদ আল হারাম শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি মুসলমানদের আবেগ, বিশ্বাস ও আত্মিক শান্তির প্রতীক। হাজার বছর ধরে এটি দাঁড়িয়ে আছে, যুগে যুগে এর আকৃতি ও অবকাঠামো পরিবর্তিত হলেও এর মাহাত্ম্য, পবিত্রতা ও আত্মিক আবেদন চিরকাল অটুট থাকবে।



















