close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের হেফাজত থেকে ছাড়া পেলেন বিএসএফ জওয়ান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পেহেলগামের পর্যটক হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের হাতে আটক হন এক ভারতীয় জওয়ান। তীব্র কূটনৈতিক আলোচনার পর তাকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয় ভারত। ফিরে এসে পরিবারে আবেগঘন মুহূর্ত—জানালেন ..

পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের হেফাজতে চারদিন থাকার পর নিরাপদে দেশে ফিরলেন ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (BSF) জওয়ান পূর্ণম কুমার সাউ। তার প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে হুগলির রিষড়ায় ছড়িয়ে পড়ে স্বস্তি ও আবেগের ঢেউ। অপারেশন সিদুঁরের সময় সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানের দখলে চলে যাওয়া এই জওয়ানকে অনেক চেষ্টার পর ফেরত পেল ভারত।

বিএসএফ সূত্র জানায়, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের উপর হামলার পরপরই সীমান্তে ব্যাপক সতর্কতা জারি করা হয়। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলার রিষড়া শহরের বাসিন্দা পূর্ণম কুমার সাউ পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখনই একটি মুহূর্তের অসতর্কতায় তিনি আন্তর্জাতিক সীমান্ত লঙ্ঘন করে ফেলেন বলে অনুমান করা হচ্ছে।

ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানি রেঞ্জার্সের নজরে আসে এবং তাকে আটক করা হয়। এই সময় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও উত্তেজনার মুখে পড়ে। তবে দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ ও সেনা স্তরে আলোচনার মাধ্যমে অবশেষে এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়।

গত ১৪ মে, বহু প্রতীক্ষিত আলোচনার ফলস্বরূপ, তাকে পাঞ্জাবের আটারি-ওয়াঘা সীমান্তে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্স। এর মাধ্যমে দুই দেশের কূটনৈতিক তৎপরতা সফল প্রমাণিত হয়।

নিজের বাড়িতে পৌঁছে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেই আবেগে ভেঙে পড়েন পূর্ণম কুমার। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি জানান, “আমি যখন ওখানে (পাকিস্তানে) ছিলাম, তখন শুধু বাবা-মা'র চিন্তায় ছিলাম। আমার পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ না থাকায় খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম।”

তিনি আরও বলেন, “বাড়ি ফিরে খুব ভালো লাগছে। বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করে একটা অন্যরকম শান্তি লাগছে। এই ক'দিন যেন দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে।”

পূর্ণম কুমারের এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যেও স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়েছে। রিষড়া শহরের বাসিন্দারা তার ফিরে আসাকে 'দ্বিতীয় জন্ম' বলেই ব্যাখ্যা করছেন। বহু মানুষ তাকে দেখতে আসেন এবং শুভেচ্ছা জানান।

এ ঘটনায় সীমান্তে দায়িত্বরত জওয়ানদের নিরাপত্তা ও মনস্তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণের বিষয়টিও ফের একবার আলোচনায় এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সীমান্ত এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনের সময় বাড়তি সতর্কতা ও মানসিক প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি।

ভারতীয় সেনা ও বিএসএফ-এর তরফ থেকে পূর্ণম কুমারের সাহসিকতা ও সংযমের প্রশংসা করা হয়েছে। তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে স্থানীয় প্রশাসন একটি নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজনের কথাও ভাবছে বলে জানা গেছে।

এই ঘটনায় ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের একটি সংবেদনশীল দিক আবারও সামনে এসেছে। যদিও কূটনৈতিক সংলাপের মাধ্যমে উত্তেজনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে, তবুও ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে উভয় পক্ষকেই আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে—এমনটাই মত বিশ্লেষকদের।



পূর্ণম কুমার সাউয়ের এই ঘটনা শুধু একজন জওয়ানের ব্যক্তিগত বিপদের কাহিনী নয়, বরং এটি দুই দেশের সম্পর্কের একটি সূক্ষ্ম অথচ গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপটকেও তুলে ধরেছে। সীমান্তের প্রতিটি মুহূর্ত কতটা জটিল ও বিপজ্জনক হতে পারে, তার বাস্তব উদাহরণ হয়ে রইল এই ঘটনা।

Keine Kommentare gefunden


News Card Generator