close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে কি আ টক করা হয়েছে?

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সামরিক উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে গ্রেপ্তারের দাবি ছড়ায় ভারতীয় মিডিয়ায়। কিন্তু অনুসন্ধানে মিলল একেবারে ভিন্ন বাস্তবতা। পুরো ঘটনা জানলে চমকে উঠবেন।

সামরিক উত্তেজনার মধ..

ভুয়া দাবি ঘিরে বিতর্ক: পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির আদৌ কি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন?

সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সামরিক উত্তেজনার পারদ বাড়তেই শুরু হয় এক অস্বাভাবিক গুঞ্জন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে কিছু ভারতীয় গণমাধ্যমে দাবি ওঠে—পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আসিম মুনির নাকি গ্রেপ্তার হয়েছেন! বিষয়টি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়, ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও।

তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে উঠে আসে ভিন্ন এক চিত্র।

১২ মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে নিশ্চিত করা হয়, আসিম মুনিরের গ্রেপ্তারের দাবিটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন। এর পেছনে নেই কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র, বরং ভারতীয় গণমাধ্যমে ৯ এপ্রিল থেকেই চালানো হচ্ছে এই বিভ্রান্তিকর প্রচার।

‘এবিপি আনন্দ’-এর বিতর্কিত ভূমিকা

গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে আলোচিত মাধ্যম ছিল ভারতীয় জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল ‘এবিপি আনন্দ’।
৮ মে দিবাগত রাত ১২টা ২২ মিনিটে তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেওয়া হয়, যেখানে বলা হয়—পাকিস্তানের সেনাপ্রধান গ্রেপ্তার। তবে এরপরের ১২ ঘণ্টার মধ্যে তারা ওই পোস্টের ভাষা তিনবার সম্পাদনা করে। শেষ পর্যন্ত পোস্টটিতে লেখা হয়—“পাকিস্তানের ১৬টি শহরে হামলা ভারতের।”

এই পরিবর্তন স্পষ্টভাবে বোঝায়, প্রাথমিক দাবিটি ছিল অস্থির ও যাচাই-বিহীন, যা পরবর্তীতে গোপনে সরিয়ে নেওয়া হয়।

কোনো আন্তর্জাতিক নিশ্চিতকরণ নেই

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো—এই দাবিকে সত্য বলে মেনে নেয়নি কোনো আন্তর্জাতিক বা পাকিস্তানি গণমাধ্যম।
বরং প্রমাণ হিসেবে উঠে আসে সম্পূর্ণ বিপরীত ঘটনা।

৯ এপ্রিল, যখন এই ভুয়া দাবিটি প্রথম ছড়ায়, ঠিক সেই দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন। আলোচনায় তাঁরা সীমান্ত উত্তেজনা কমানো এবং ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে শান্তিপূর্ণ সংলাপের উপর গুরুত্ব দেন।

এই ঘটনাই প্রমাণ করে, ওই সময় আসিম মুনির সক্রিয় দায়িত্বে ছিলেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওয়েবসাইটেও তথ্য একই

এতদিন পরও পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এবং সেনাবাহিনীর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জেনারেল আসিম মুনিরের নামই সেনাপ্রধান হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। এতেই প্রমাণ হয়—তাঁর গ্রেপ্তারের খবর শুধুই গুজব এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তি।


উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণা, না কি মিডিয়ার দায়িত্বজ্ঞানহীনতা?

বর্তমান বিশ্বে ভুল তথ্য ও গুজব যেভাবে দ্রুত ছড়ায়, সেটির অন্যতম উদাহরণ হয়ে রইল পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ঘিরে ছড়ানো এই গুজব।
এটি একদিকে যেমন সত্যিকারের সংকটকে আড়াল করে, অন্যদিকে তথ্যভিত্তিক সাংবাদিকতার মানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।

সতর্ক পাঠক, নাগরিক এবং সংবাদমাধ্যমগুলোকে এই ধরনের ভুল তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকা উচিত এবং যাচাই-বাছাই ছাড়া কোনো সংবাদ পরিবেশন না করাই শ্রেয়।

Walang nakitang komento