পাকিস্তানের পাল্টা হামলার মাত্রা দেখে হতবাক হয়ে পড়ে ভারত : সিএনএন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারতের নজিরবিহীন হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধে চরম শক্তি প্রয়োগ করে পাকিস্তান, যার তীব্রতায় হতভম্ব হয়ে পড়ে নয়াদিল্লি। শেষমেশ মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধে ইতি টানার পথে সম্মত হয় দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ।..

দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তান সাম্প্রতিক সময়ে এক উত্তপ্ত সংঘাতের মধ্য দিয়ে গেছে, যা সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে ছিল অত্যন্ত সংকটজনক ও ধ্বংসাত্মক সম্ভাবনার পূর্ণ। একাধিক হামলা ও পাল্টা আঘাতের পর শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে দুই দেশ। এই চুক্তির পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি কূটনৈতিক তৎপরতা ছিল বলে জানিয়েছে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৭১ সালের পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আর কখনো এতটা উত্তপ্ত হয়নি। সূত্রমতে, ভারতের একটি আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে পাকিস্তান যেভাবে পাল্টা হামলা চালায়, তার মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে নয়াদিল্লির উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকরাও তা কল্পনা করতে পারেননি।

সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান সরকার সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, এই সংঘাত যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি করেছিল, তখনই শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নেয় যুক্তরাষ্ট্র। যদিও আলোচনা এগোচ্ছিল, এর মধ্যেই শনিবার ভোররাতে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়, যা ইসলামাবাদকে বিস্মিত করে। পাকিস্তান তখন ভাবছিল যে কূটনৈতিক সমাধান প্রায় চূড়ান্ত। কিন্তু ভারতের এই আকস্মিক হামলা পাকিস্তানকে বাধ্য করে কঠোর জবাব দিতে।

এই পাল্টা হামলায় পাকিস্তান ভারতের বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটি ও কাশ্মির সীমান্তের সামরিক স্থাপনায় মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী একে আখ্যা দেয় "চোখের বদলে চোখ" কৌশল হিসেবে।

সিএনএন-কে দেওয়া বক্তব্যে সেই সূত্র আরও জানায়, পাকিস্তানের পাল্টা হামলার পর ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থা ও প্রতিরক্ষা বিভাগের ভেতর এক ধরনের হতাশা ও চমক তৈরি হয়। এরপরই দুই দেশ আলোচনায় ফিরে আসে এবং ব্যাপকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও’র নেতৃত্বে আলোচনা এগিয়ে নেয়া হয়। কূটনৈতিক এ আলোচনায় যুক্ত হয় সৌদি আরব ও তুরস্কের প্রতিনিধিরাও।

শনিবার বিকেলের পর দুই দেশের কেউই নতুন করে আর কোনো হামলা চালায়নি। এরপর দুই ঘণ্টা সময়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসে, যা উপমহাদেশের জনগণের জন্য কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনে।

তবে এই চুক্তির প্রকৃত রূপ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে দুই দেশের ভেতরেই। পাকিস্তান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় মধ্যস্থতায় এই যুদ্ধবিরতির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে, ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে তারা সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গেই আলোচনা করে চুক্তিতে পৌঁছেছে, এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এখানে গৌণ।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সংঘাত ছিল খুবই সংকটপূর্ণ এবং একে দ্বিতীয় কার্গিল বা নিয়ন্ত্রণরেখা যুদ্ধের মতো বলেও বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে আপাতত যুদ্ধের ছায়া কিছুটা কেটে গেলেও উপমহাদেশে নতুন করে উত্তেজনার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব আগামী দিনগুলোতে কূটনৈতিক অঙ্গনে পড়বে।

No comments found