সীমান্তে আগুন! ভারত-পাকিস্তানের মুখোমুখি সংঘর্ষে মসজিদেও আঘাত, নিহত শিশু-কিশোর
দক্ষিণ এশিয়ায় এক ভয়াবহ সংঘর্ষের নতুন পর্বের সূচনা হলো ৭ মে ভোরে। ভারতের সেনাবাহিনী একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের অন্তত নয়টি স্থানে। এর মধ্যে দুটি মসজিদ, একটি শিশু হাসপাতাল এবং একাধিক বেসামরিক স্থাপনা রয়েছে। ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন এবং আরও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন মাত্র তিন বছরের একটি শিশু, ১৬ বছরের এক কিশোরী এবং ১৮ বছরের এক যুবক।
সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি কোথায়?
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুর জেলার আহমেদপুর শারকিয়া এলাকায় আঘাত হেনেছে সবচেয়ে বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। এখানকার একটি মসজিদের প্রাঙ্গণে মিসাইল বিস্ফোরণে এক শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নামাজের জন্য জমায়েত হয়েছিল এলাকাবাসী, তখনই আচমকা হামলা হয়।
মুজাফফরাবাদের বিখ্যাত বিলাল মসজিদেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে আহত হয়েছে আরও এক শিশু। এছাড়াও কোটলি, মুরিদকে ও বাঘ এলাকাতেও বোমা বর্ষণের খবর মিলেছে, যেখানে বেশ কয়েকজনের আহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
পাকিস্তানের প্রতিশোধ: বিমান থেকে ঝড় নামাল পিএএফ
ভারতের এই হামলার পর পরই পাল্টা জবাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে দাবি করেন, ভারতীয় বাহিনীর সীমান্ত আগ্রাসনের জবাবে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারতের একটি ব্রিগেড সদর দপ্তরেও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়, যা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি।
ভারতের দাবি: ‘অপারেশন সিন্দুর’ চালিয়ে সন্ত্রাস দমন
দিল্লির পক্ষ থেকে দেওয়া বক্তব্যে জানানো হয়, এই হামলার নাম ‘অপারেশন সিন্দুর’। ভারতের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি মূলত পাকিস্তান এবং পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর অঞ্চলের সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে পরিচালিত এক সামরিক অভিযান। তারা দাবি করেছে, এই পদক্ষেপ ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই নেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক রুটেও প্রভাব: আকাশে অনিশ্চয়তা
এই হামলার পর পাকিস্তানের আকাশসীমায় দেখা দিয়েছে চরম উত্তেজনা। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশগামী দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটকে পাক আকাশ ছেড়ে অন্যত্র গমন করতে বাধ্য করা হয়েছে।
১. তুরস্ক থেকে ঢাকাগামী তার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ওমানের মাসকটে অবতরণ করে।
২. কুয়েত এয়ারওয়েজের আরেকটি ফ্লাইট কুয়েতে ফিরে যায়, নির্ধারিত গন্তব্যে পৌঁছাতে না পেরে।
উপমহাদেশে যুদ্ধের ছায়া?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও ভয়াবহ সংঘর্ষের দিকে যাচ্ছে। দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশের এমন সংঘর্ষ বিশ্ব রাজনীতিতে অশনি সংকেত বয়ে আনছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে, এবং প্রতিটি হামলার পাল্টা জবাব আরও “তীব্র ও মারাত্মক” হবে।
পাকিস্তানের মসজিদে হামলা চালিয়ে ভারতের সামরিক অভিযান কেবল সীমান্ত নয়, ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত করেছে বলে অভিযোগ উঠছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতা এবং দ্রুত কূটনৈতিক আলোচনার বিকল্প নেই। না হলে এই উত্তেজনা গড়াতে পারে সর্বনাশা সংঘাতে।