close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপ নিল ভারত

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কাশ্মীর হামলার রেশ না কাটতেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিল মোদি সরকার। এবার বন্ধ হলো সব ধরনের আমদানি—আর শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের জাহাজও আর ঢুকতে পারবে না ভারতীয় বন্দরে! কেন এমন সিদ্ধান্ত? কী প..

ভারতের ‘ফাইনাল স্ট্রোক’: পাকিস্তানের পণ্যে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা!

দক্ষিণ এশিয়ার চিরবৈরী দুই প্রতিবেশী—ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেল। সাম্প্রতিক কাশ্মীর হামলার ঘটনার পর এবার দিল্লি নিয়েছে কড়া অবস্থান। পাকিস্তান থেকে সমস্ত পণ্যের আমদানি, সরাসরি হোক বা পরোক্ষভাবে—পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার।

এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ামাত্র পাকিস্তান-উৎপাদিত বা পাকিস্তান থেকে রপ্তানিকৃত কোনো পণ্য আর ভারতীয় বাজারে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি পাকিস্তানি কোনো জাহাজকেও আর ভারতীয় কোনো বন্দরে ভিড়তে দেওয়া হবে না।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, “জাতীয় নিরাপত্তা এবং জননীতির স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হলো। এই নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ব্যতিক্রম হলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্বানুমোদন লাগবে।”


 সীমান্তে নয়, এবার ‘বাণিজ্য যুদ্ধ’

দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক বৈরিতা বহু পুরনো, তবে কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের নতুন কৌশল নিয়েছে ভারত। ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত পথ অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরও হংকং বা আরব আমিরাতের মতো তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পাকিস্তান থেকে কিছু পণ্য ভারতে প্রবেশ করত।

এই পণ্যগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ওষুধ, বিভিন্ন ফলমূল এবং তৈলবীজ। কিন্তু এবার সেই পথও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হলো। ভারতের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাকিস্তান থেকে ভারতের আমদানি ছিল মোট আমদানির মাত্র ০.০০০১%—তাও আর থাকছে না।

এর আগেও ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর ভারত পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ২০০% শুল্ক আরোপ করে।


 আইএমএফে ভারতের কূটনৈতিক চাপ: পাকিস্তানের ঋণ বন্ধ করতে চায় দিল্লি!

শুধু বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞাই নয়, পাকিস্তানের আন্তর্জাতিক আর্থিক সহায়তাও বন্ধ করতে মরিয়া ভারত। নয়াদিল্লির সূত্র অনুযায়ী, ভারত সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF)-কে অনুরোধ করেছে যেন তারা পাকিস্তানকে দেওয়া ঋণ পুনরায় পর্যালোচনা করে।

রয়টার্সকে এক সরকারি কর্মকর্তা জানান, “ভারত আইএমএফের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং পাকিস্তানকে দেওয়া সব ধরনের ঋণ পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে।”

উল্লেখ্য, গত বছর পাকিস্তান ৭ বিলিয়ন ডলারের আইএমএফ ঋণ পেয়েছে এবং ২০২৫ সালের মার্চে ১.৩ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু সহায়তা ঋণও পেয়েছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, এসব ঋণ তাদের অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

কিন্তু ভারত মনে করছে, পাকিস্তান এই তহবিল ব্যবহার করে কাশ্মীর অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়াতে পারে—এমন অভিযোগও উঠেছে গোপনে।


 দক্ষিণ এশিয়ায় বাড়ছে উত্তেজনা: কী হতে পারে পরিণাম?

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের এমন সিদ্ধান্ত শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তর ভূরাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। পাকিস্তানের রপ্তানি সীমিত হওয়ায় অর্থনীতির উপর তা বিরূপ প্রভাব ফেলবে নিঃসন্দেহে। অপরদিকে, ভারত এমন কৌশলিক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একপ্রকার কূটনৈতিক বার্তা দিতে চেয়েছে—সন্ত্রাসবাদ মদদদাতাদের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক নয়।


 

কাশ্মীর হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই, ভারতের পক্ষ থেকে এ যেন এক ‘কড়া জবাব’। অর্থনৈতিক চাপে ফেলে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক মহলে কোণঠাসা করাই মূল লক্ষ্য বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। তবে এই নিষেধাজ্ঞার পরবর্তী পরিণতি কেমন হবে—তা সময়ই বলে দেবে।

No comments found