পেন্টাগনের রিপোর্টে চীন ও পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান সামরিক ঘনিষ্ঠতাকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বিরুদ্ধে একটি কৌশলগত জোট হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বেইজিং ইসলামাবাদের সঙ্গে কেবল সাধারণ বাণিজ্যিক সম্পর্কই নয়, বরং গভীর সামরিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে। বর্তমানে দুই দেশ যৌথভাবে জেএফ-১৭ (JF-17) যুদ্ধবিমান তৈরি করছে। শুধু তাই নয়, চীন তাদের সর্বাধুনিক জে-১০ (J-10) যুদ্ধবিমানের একমাত্র ক্রেতা হিসেবে পাকিস্তানকে বেছে নিয়েছে, যা আন্তর্জাতিক অস্ত্র বাজারে এই দুই দেশের বিশেষ সখ্যতারই বহিঃপ্রকাশ।
এই সামরিক সম্পর্কের গভীরতা আরও স্পষ্ট হয় যখন দেখা যায় পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে ৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে আটটি ইউয়ান-ক্লাস সাবমেরিন ক্রয় করছে। ড্রোন প্রযুক্তি থেকে শুরু করে উচ্চ প্রযুক্তির সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করার মাধ্যমে চীন পাকিস্তানকে একটি নির্ভরযোগ্য প্রক্সি হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, মার্কিন প্রতিবেদন অনুযায়ী চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি পাকিস্তানে স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। যদি এটি বাস্তবায়িত হয়, তবে আরব সাগর ও ভারত মহাসাগর অঞ্চলে বেইজিংয়ের সরাসরি উপস্থিতিতে ভারতের নিরাপত্তা বলয় আরও সংকুচিত হয়ে পড়বে।
চীনের এই আগ্রাসী কূটনীতি ও সামরিক সহায়তা কেবল পাকিস্তানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, তারা আরও কিছু দেশে ড্রোন ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করে তাদের প্রভাব বলয় বিস্তার করছে। ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা এবং উন্নয়নের স্বার্থে চীন তাদের বাহিনীকে বিশ্বের যেকোনো স্থানে লড়াই করে জেতার মতো দক্ষ করে তুলছে। পাকিস্তানের মাটিতে চীনা ঘাঁটি স্থাপন এবং আকাশসীমায় অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের মহড়া দক্ষিণ এশিয়ায় এক অস্থির সামরিক প্রতিযোগিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, চীনের এই সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ভারতের অরুণাচল থেকে শুরু করে সমগ্র এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে এক বড় ধরণের ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের চেষ্টা।



















