close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

পা রমাণ বিক পরিষদের জরুরি মিটিং ডেকেছেন শেহবাজ শরীফ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ভারতের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ডেকেছেন জাতীয় কমান্ড অথরিটির (NCA) জরুরি বৈঠক। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত কি আসছে? বিশ্ব এখন দুশ্চিন্তায়..

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা পৌঁছেছে চরমে। দুই প্রতিবেশী পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে চলমান সংঘাত নতুন এক বিপজ্জনক মোড় নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ শনিবার জাতীয় কমান্ড অথরিটি (NCA)-এর একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন, যা দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক ও সামরিক সমন্বিত পরিষদ। এই পরিষদের হাতেই রয়েছে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ ও কমান্ড।

সাধারণত এই পরিষদের বৈঠকই নির্ধারণ করে দেশের প্রতিরক্ষা নীতিমালার দিকনির্দেশনা। এবার পরিস্থিতি এতটাই জটিল ও উদ্বেগজনক যে, এই মিটিং ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ বাড়ছে। শেহবাজ শরীফ কি পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেবেন, না কি কূটনৈতিক সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানাবেন—এখন সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

গত কয়েকদিন ধরেই সীমান্ত অঞ্চলে সংঘর্ষ ও পাল্টা হামলা চলছে। ভারতের চালানো 'অপারেশন সিঁদুর'-এর জবাবে পাকিস্তান চালিয়েছে 'অপারেশন বুনিয়ান-উল-মারসুস'। একাধিক সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে চালানো হামলায় দুই দেশেরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

অনলাইন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম 'এক্সপ্রেস ট্রিবিউন' সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তান শনিবার ভোরে ভারতের বেশ কয়েকটি উচ্চ-স্তরের সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে ভারতের উধমপুর বিমানঘাঁটি, পাঠানকোট ও আদমপুর এয়ারফিল্ড এবং বিয়াসে ব্রহ্ম ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগার ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সব সামরিক স্থাপনা থেকেই পূর্বে অমৃতসর, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানমুখী ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ হতো। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব হামলা ছিল অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এটি ছিল কৌশলগত প্রতিরক্ষা পদক্ষেপ।

পাকিস্তানি কর্মকর্তারা আরও দাবি করেছেন, জি-টপ অঞ্চলে ভারতের ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার, উরি এলাকার সরবরাহ ঘাঁটি, দেহরাঙ্গিয়ারির সামরিক আর্টিলারি পজিশন এবং নাগ্রোটার ব্রহ্ম ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগার লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় পাকিস্তান ব্যবহার করেছে নিজস্ব তৈরি আল-ফাতাহ ক্ষেপণাস্ত্র। তাদের দাবি অনুযায়ী, হামলাগুলোতে ভারতের বড় ধরনের সামরিক ক্ষতি হয়েছে।

অপরদিকে, ভারতের পক্ষ থেকেও পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকায় সেনা মোতায়েন বাড়ানো হয়েছে এবং যুদ্ধবিমানের টহলও বেড়েছে।

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বিশ্ব শক্তিগুলোর উদ্বেগও বাড়ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সরাসরি ফোন করে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে উত্তেজনা প্রশমনের অনুরোধ জানান। একইসঙ্গে চীন থেকেও একটি বার্তা এসেছে, যাতে দুই দেশকে শান্ত থাকার এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তানের জাতীয় কমান্ড অথরিটির এই জরুরি বৈঠক হতে পারে একটি মোড় পরিবর্তনের মুহূর্ত। যদি বৈঠকে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার ইঙ্গিত আসে, তাহলে তা পুরো দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই, গোটা বিশ্বের জন্য ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে। অন্যদিকে, শান্তি ও কূটনৈতিক আলোচনার পথে হাঁটার সিদ্ধান্তও এই বৈঠক থেকেই আসতে পারে।

সারা বিশ্বের নজর এখন ইসলামাবাদে—শেহবাজ শরীফ কী সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই নির্ধারণ করবে আগামী দিনগুলোর চেহারা।

No comments found