ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খানের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু। তিনি তার ফেসবুক আইডি থেকে প্রকাশ্যেই মাসুম খানকে ‘ডাকাতদলের সর্দার’ আখ্যা দিয়ে একটি পোস্ট করেন, যা মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
গত রবিবার (১৫ জুন) রাত ৯টার দিকে দেওয়া সেই পোস্টে জয়ন্ত কুণ্ডু অভিযোগ করেন, ওসি মাসুম খানের তত্ত্বাবধানে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায় বিএনপি নেতা মনিরুল ইসলাম হিটু ও শহীদুল ইসলাম সাঈদুরের বাড়িতে। তিনি লিখেন, “ওসি (সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসায়ী ও ডাকাতদলের সর্দার) মাসুমের নির্দেশনায় এই হামলা হয়েছে।” একইসঙ্গে তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
ফেসবুক পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, “অচিরেই এসব সমাজবিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।” তার এই বক্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় অনেক নেটিজেন মন্তব্য করেছেন, “ওসি মাসুম খান যোগদানের পর থেকেই শৈলকুপার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে গেছে।” অভিযোগ উঠেছে, তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করে অপরাধীদের রক্ষা করছেন এবং মাদক ব্যবসায়ীদের নির্দ্বিধায় কার্যক্রম চালাতে দিচ্ছেন।
বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর থেকে ওসির বিরুদ্ধে ঘুষ, পক্ষপাতমূলক আচরণ এবং অপরাধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ের অভিযোগ দিন দিন বাড়ছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ওসি মাসুম খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে, বিএনপি নেতাদের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যেও চরম উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা মনে করছেন, পুলিশ প্রশাসন যদি দলীয় চরিত্র ধারণ করে, তাহলে সাধারণ জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে।
স্থানীয় রাজনীতিতে এই ঘটনা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, যদি হামলাকারীদের বিচার না হয় এবং ওসির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন।
এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে—রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনে পুলিশ প্রশাসনের ‘রাজনৈতিক ব্যবহার’ নিয়ে আশঙ্কা কতটা প্রকট আকার ধারণ করেছে। যদি সত্যিই এসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে এটি শুধুমাত্র পুলিশের সুনামহানিই নয়, বরং গণতন্ত্রের জন্যও হুমকিস্বরূপ।
একজন ওসি যদি জনগণের নিরাপত্তা না দিয়ে, উল্টো সন্ত্রাসীদের তত্ত্বাবধানে থাকেন, তাহলে সেখানে আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সময় এসেছে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ফেরানোর এবং দায়ীদের দ্রুত জবাবদিহির আওতায় আনার।



















