close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

অবশেষে যু দ্ধবির তি নিয়ে মুখ খুললেন নেতানিয়াহু

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
তীব্র উত্তেজনা আর রক্তক্ষয়ের পর অবশেষে থামলো যুদ্ধের দামামা। ইরান ও ইসরায়েল একযোগে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে বলে ঘোষণা এসেছে। তবে তেহরান সরাসরি অস্বীকার করলেও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু মার্কিন..

বিশ্ব রাজনীতির উত্তপ্ত কেন্দ্রবিন্দুতে ইরান ও ইসরায়েল—সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও পাল্টা হামলার এক রক্তাক্ত অধ্যায় শেষ হলো এক বহুল প্রত্যাশিত ঘোষণা দিয়ে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানানো হয়, ইসরায়েল এখন একটি ‘পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। এই পদক্ষেপ এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি উদ্যোগে।

যদিও এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছিলেন—ইরান ও ইসরায়েল উভয়েই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি তাৎক্ষণিকভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, "তেহরান এমন কোনো চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি যা যুদ্ধ স্থগিত করে।" কিন্তু বিশ্ব গণমাধ্যম এবং ওয়াশিংটন সূত্রে পরবর্তীতে জানানো হয়, পরিস্থিতি বদলেছে এবং দুপক্ষের মধ্যেই যুদ্ধবিরতির কার্যকর বাস্তবতা তৈরি হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা ইরানে চলমান সামরিক অভিযানের মাধ্যমে দুটি প্রধান হুমকি—পারমাণবিক কার্যক্রম ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র—সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করেছি। আইডিএফ (ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স) তেহরানের আকাশে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে এবং ইরানের সামরিক নেতৃত্বের ওপর কৌশলগত আঘাত হেনেছে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তার জন্য নেতানিয়াহু সরাসরি ধন্যবাদ জানান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে। তিনি বলেন, “এই জয় শুধু ইসরায়েলের নয়, বরং পশ্চিমা বিশ্বের নিরাপত্তারও প্রতীক।

১৩ জুন দিনগত রাতে, কোনোপ্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামে ইরানে ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরায়েল। রাজধানী তেহরানসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় হামলা হয়। এতে নিহত হন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসি প্রধান হোসেইন সালামি এবং বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর একাধিক শীর্ষ জেনারেল। পাশাপাশি নিহত হন অন্তত ১০ জন পরমাণু বিজ্ঞানী সহ প্রায় ৫০০ জন বেসামরিক ও সামরিক সদস্য।

এই বর্বরোচিত হামলার জবাবে ইরান দ্রুত পাল্টা প্রতিশোধ নিতে শুরু করে। ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩’ নামের অভিযানে ইরানি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানায় এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সুনির্দিষ্ট আঘাত হানে।

২১ জুন দিনগত রাতে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে ওঠে, যখন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় আক্রমণ চালায়। পরদিন কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায় তেহরান। এতে বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয় এবং আশঙ্কা করা হচ্ছিল এক সর্বগ্রাসী যুদ্ধের।

এর মধ্যে মধ্যরাতে রাশিয়ার পক্ষ থেকেও দফায় দফায় হামলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। যুদ্ধবিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে এই হামলাগুলো পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তোলে, যদিও রাশিয়া এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি।

বহু প্রাণহানি, সামরিক স্থাপনার ধ্বংসস্তূপ এবং অগণিত মানুষের আতঙ্কের মাঝেই অবশেষে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়েছে বিশ্ববাসী। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত কি সত্যিই থেমে গেল, নাকি এটি একটি সাময়িক বিরতি—তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত এই যুদ্ধবিরতি মধ্যপ্রাচ্যে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের চূড়ান্ত চিহ্ন রেখে গেল।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator