অভিমানের ভালোবাসা

Sakhawat Hossain avatar   
Sakhawat Hossain
সাম্য আর মধুরিমা একই অফিস, দুই ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ।  
সাম্য, শান্ত স্বভাবের, ভদ্র আর দায়িত্ববান। মধুরিমা ঠিক তার বিপরীত চঞ্চল, প্রাণবন্ত, কালো বর্ণের হলেও চোখদুটো এমন যে একবার তাকালে কেউ সহজে ভুল..

সাম্য আর মধুরিমা একই অফিস, দুই ভিন্ন প্রকৃতির মানুষ।  
সাম্য, শান্ত স্বভাবের, ভদ্র আর দায়িত্ববান। মধুরিমা ঠিক তার বিপরীত চঞ্চল, প্রাণবন্ত, কালো বর্ণের হলেও চোখদুটো এমন যে একবার তাকালে কেউ সহজে ভুলতে পারে না।  
  
প্রথমে অফিসের টুকটাক কথা, তারপর সোশ্যাল মিডিয়া বা কলে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা। তারপর সেই আড্ডাই একসময় পরিণত হলো রোজকার অভ্যাসে। কখন যে সময়গুলো রুটিনের মতো হয়ে গেল সকাল অফিসে দেখা, বিকেলে একসাথে চা, রাতে ঘন্টার পর ঘন্টা ফেসবুকে গল্প তা কেউ বুঝে উঠতে পারলো না।  
  
চার মাস এই চার মাসে সাম্য আর মধুরিমা তাদের মনের দরজা একে অপরের জন্য খুলে দিয়েছিল।  
সাম্য বুঝেছিল, এই মেয়েটাই তার “নিজের মানুষ”।  
আর তাই একদিন একেবারে মন খুলে বলে ফেলল,  
— “চলো, আমরা বিয়ে করি।”  
  
মধুরিমা হেসে উত্তর দিলো,  
— “তুমি বরং অন্য কাউকে বিয়ে করো। আমি তোমার জন্য না।”  
  
সাম্য প্রথমে বুঝে উঠতে পারলো না। সে ভাবলো, মধুরিমা হয়তো ঠাট্টা করছে।  
কিন্তু পরপর দুই-তিনবার প্রস্তাবের পরও যখন একই উত্তর—তুমি অন্য কাউকে বিয়ে করো—তখন তার মনটা ভেঙে পড়লো নিঃশব্দে।  
  
তবুও সে হাল ছাড়লো না।  
ভেবেছিল, সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে।  
  
ঈদুল আজহায় সাম্য বাড়ি গেলো। বাড়িতে চাপে পড়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে হলো। অথচ সে জানতো, তার মন এখনো মধুরিমার কাছেই বন্দি।  
  
তবে সে ভেবেছিল—যেহেতু মধুরিমা তার প্রস্তাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে না, তাহলে এই সম্পর্ক আর টানা উচিত নয়। পরিবার, সমাজ, বয়স—সব মিলিয়ে একটা সময় তো আসেই, যখন সিদ্ধান্ত নিতেই হয়।  
  
একদিন সাহস করে সে মধুরিমাকে জানালো,  
— “তুমি তো আগ্রহ দেখাচ্ছো না। এখন আমার জন্য পাত্রী দেখা হচ্ছে। ঘটকও লাগানো হয়েছে।”  
  
সেই কথাগুলো যেন মধুরিমার কানে বিষের মতো ঢুকে গেল।  
সে আর দেরি করলো না। হোয়াটসঅ্যাপে এক লম্বা মেসেজ:  
— “আপনি যেহেতু বিয়ে করবেন, আপনার সাথে আর কোনো কথা নেই। আজকের পর থেকে কলও না, মেসেজও না। আপনি বিয়ে করে সুখী হোন।”  
  
এরপর—নিরবতা।  
  
ফোনের স্ক্রিনে আর মধুরিমার নামটা ভেসে ওঠে না।  
অফিসেও দূরত্ব, কথা নেই, হাসি নেই।  
  
সাম্য বুঝে উঠতে পারে না—যে মেয়ে বিয়েতে রাজি হলো না, সেই এখন অভিমান করছে কেন?  
সে ভেবেছিল, হয়তো ভালোবাসাটা একতরফা। কিন্তু ভালোবাসা একতরফা হলে কেউ অভিমান করে? 

Tidak ada komentar yang ditemukan