close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

অভিযুক্ত আ.লীগ নেতাকে রক্ষা করছে বালিয়াকান্দী উপজেলা প্রশাসন!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দী উপজেলার জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম ফরিদ হোসেন বাবু মিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ও অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় প্রশ্ন উঠছে। দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস..

রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দী উপজেলার ৭ নং জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় সহ-সভাপতি এ কে এম ফরিদ হোসেন বাবু মিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ থাকার পরেও প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রায় পাঁচ মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত, অথচ ইউনিয়ন পরিষদের সব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন আড়ালে থেকেই।

একাধিক মামলা ও পালিয়ে থাকার অভিযোগ

এ কে এম ফরিদ হোসেন বাবু মিয়ার বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলা এবং বালিয়াকান্দী থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে থাকলেও, তার ব্যবসা-বাণিজ্য ও ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের কিছু নেতা তার এই অনিয়ম ও অপরাধকে আড়াল করে রাখছেন।

ইউনিয়ন পরিষদের সেবায় ভয়াবহ অনিয়ম

জনগণের অভিযোগ, চেয়ারম্যান বাবু মিয়ার দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার কারণে ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পরিষদে কোনো নাগরিক সেবা পেতে গেলে তার স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়, যা কৌশলে ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ মনিরুজ্জামান রানা ও উদ্যোক্তা অসিত কুমার বিশ্বাসের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। তবে স্থানীয়দের সন্দেহ, এদের কারসাজিতে কখনো কখনো জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমেও পরিষদের কাজ চালানো হচ্ছে।

জুট মিলের অর্থ কেলেঙ্কারি

বাবু মিয়ার মালিকানাধীন আব্দুল জলিল জুট মিলের কোটি কোটি টাকা পাওনা পরিশোধ না করেই তিনি নির্বিঘ্নে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এই মিল থেকে কাঁচামাল সরবরাহ করে বহু ব্যবসায়ী ও শ্রমিক তাদের পাওনা না পাওয়ার কারণে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে তিনি অনেক যুবকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন এবং প্রতিশ্রুতি পূরণ না করেই তাদের নিঃস্ব করে দিয়েছেন। ফলে বহু পরিবার এখন আর্থিক সংকটে ভুগছে।

অবৈধ ভূমি দখল ও বিক্রির অভিযোগ

সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমের ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের জমি অবৈধভাবে দখল করেছেন এবং এখনো সেসব জমি বিক্রি করে যাচ্ছেন মাত্র ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে। এছাড়া, তিনি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের লাইসেন্সধারী সারের ডিলার হলেও, তার কোনো বৈধ দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নেই। তবুও লাইসেন্স ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম করে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রশাসনের নীরবতা ও জনগণের ক্ষোভ

স্থানীয় জনগণ মনে করেন, উপজেলা প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও কিছু আওয়ামী লীগ নেতা মিলে এই অনিয়মকে দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। সাধারণ মানুষ প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ড ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে এই অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তির শিকার।

জনগণের দাবি ও প্রশাসনের ভূমিকা

জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এখন প্রশ্ন উঠেছে, কেন প্রশাসন এত অভিযোগের পরেও অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? স্বৈরাচারী আচরণের অবসান ঘটিয়ে প্রশাসন কি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে, নাকি ক্ষমতাসীন দলের ছত্রচ্ছায়ায় এই অনিয়ম চলতেই থাকবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে এলাকাবাসী।

No comments found


News Card Generator