ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজা যুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন। সফরের মূল উদ্দেশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গাজা যুদ্ধের অবসান, ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করা।
মঙ্গলবার ইসরাইলের মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন, তিনি আগামী শনিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা দেবেন। সফরে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ, বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি। এছাড়াও মার্কিন শীর্ষ আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে।
নেতানিয়াহু মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেন, ‘অপারেশন রাইজিং লায়নে’ আমরা বিশাল সাফল্য অর্জন করেছি। এখন সময় সেই সাফল্যকে কাজে লাগানোর। তিনি বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং পারমাণবিক হুমকির মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
গাজা যুদ্ধের অবসান এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফেরাতে মার্কিন মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ নিয়ে আলোচনা ত্বরান্বিত হয়েছে। এছাড়াও সিরিয়ার সঙ্গে তেল আবিবের সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়েও কথা বলা হচ্ছে।
নেতানিয়াহু আশা প্রকাশ করেন, ওয়াশিংটন সফরে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত হবে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করবে। তবে তিনি বলেন, চুক্তির আগে কয়েকটি জটিল বিষয়ের নিষ্পত্তি জরুরি।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে নতুন পরিবর্তন আনতে পারে। গাজা যুদ্ধের পর প্রথম বৈঠক হওয়ায় এই সফরকে খুব গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত ১২ দিনের যুদ্ধের পর ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ভাঙাচোরা পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার জন্য গাজা যুদ্ধের অবসান অত্যন্ত জরুরি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয়ে মধ্যস্থতার দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছে এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে।
নেতানিয়াহুর সফর মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতিতে নতুন গতি এনে দিতে পারে, বিশেষ করে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও অঞ্চলীয় শক্তি ভারসাম্যের ক্ষেত্রে।
নেতানিয়াহুর এই সফরের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দৃঢ় হবে এবং দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, সামরিক ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।