জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও উপস্থাপিকা নুসরাত ফারিয়া রবিবার থাইল্যান্ড যাওয়ার পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক হন। এরপর তাকে হস্তান্তর করা হয় রাজধানীর ভাটারা থানায়, সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ভাটারা থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এই ঘটনার রেশ না কাটতেই সোমবার (১৯ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে হাজির করা হয় ঢাকার সিএমএম আদালতে। আদালতে হাজিরের সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফারিয়াকে কারাগারে পাঠানোর আবেদন জানান। অপরদিকে, তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক আদেশ দেন তাকে কারাগারে পাঠানোর।
এই ঘটনায় পুরো শোবিজ অঙ্গনে দেখা দিয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। বিশেষ করে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন এই গ্রেপ্তার নিয়ে সরব হয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দিয়ে স্পষ্ট করে দিয়েছেন—এটি একটি ভয়ানক অনিয়ম।
সোমবার সকাল ৮টার দিকে দেওয়া পোস্টে বাঁধন লেখেন:
"কি লজ্জার বিষয়! এই মেয়েটির কোনো দোষ নেই। সে মোটেই দায়ী নয়। যারা ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে তাদের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।"
তিনি আরও বলেন:
"বর্তমান পরিস্থিতি এবং ব্যবস্থা নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা এমন দেশে বাস করি না, যেখানে ন্যায়বিচার সাধারণভাবে প্রচলিত। তবে এবারের ঘটনাটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।"
বাঁধনের এমন সাহসী মন্তব্য ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকেই মন্তব্য করছেন, একজন শিল্পীর প্রতি রাষ্ট্রের এমন আচরণ কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
নুসরাত ফারিয়া বাংলাদেশের বিনোদন জগতে এক উজ্জ্বল নাম। তিনি দেশীয় সিনেমা ও মিউজিক ভিডিও ছাড়াও ভারতীয় বাংলা সিনেমাতেও কাজ করে খ্যাতি পেয়েছেন। হঠাৎ এমন এক গ্রেপ্তার অভিযান পুরো ইন্ডাস্ট্রির ওপর চাপ তৈরি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে—এটা কি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত?
সামাজিক প্রতিক্রিয়া:
এছাড়াও অন্যান্য তারকারাও এই বিষয়ে নানান প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন, এটি একটি সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধের নতুন কৌশল, আবার কেউ বলছেন এটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত গ্রেপ্তার।
মামলার পটভূমি:
যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, সেটির বিস্তারিত এখনো পুরোপুরি প্রকাশ করা হয়নি। তবে জানা গেছে, এটি একটি রাজনৈতিক প্রভাবিত মামলা হতে পারে।
নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার শুধু একজন তারকার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নয়, বরং এটি পুরো সংস্কৃতি জগতকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বাঁধনের মতো সাহসী কণ্ঠগুলো সমাজে নতুন আলোচনার সূচনা করেছে—এবার মানুষ প্রশ্ন তুলছে, "কে আসল অপরাধী?"
নুসরাত ফারিয়ার মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হতে শুরু করেছে অনেকে। এখন দেখার বিষয়, আদালতের পরবর্তী আদেশে কি মুক্তি মিলবে, নাকি পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে?