পিরোজপুর শহরের সদর উপজেলা মডেল মসজিদের নির্মাণাধীন ক্যাম্পাসে শুক্রবার (২৩ মার্চ) দুপুরে একটি ঘটনা ঘটেছে, যা স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। হামলাকারী ১০-১২ জনের একটি দল, যার নেতৃত্বে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মুসাব্বির মাহমুদ সানি, মসজিদের নির্মাণ কাজের সময় হামলা চালায়। দলটি মসজিদে ভাঙচুর ও কর্মচারীদের মারধর করে এবং সেখান থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হামলাকারীরা মসজিদ কমপ্লেক্সে ঢুকে সেখানকার কর্মচারীদের পিটিয়ে আহত করে এবং নির্মাণাধীন প্রকল্পের ক্যাশ থেকে টাকা লুট করে। এই ঘটনায় স্থানীয় জনগণ ও মসজিদের কর্মচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
এ ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুকিত হাসান খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, “এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না এবং অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা হবে।”
শনিবার (২৪ মার্চ) সকালে, সদর থানায় মসজিদের সাইট ম্যানেজার মো. শহিদুল ইসলাম এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় সানির বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুর এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ আনা হয়।
পুলিশ তৎক্ষণাৎ তদন্তে নামে এবং দুপুরের দিকে সানিকে ব্র্যাক ব্যাংকের সামনে থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশের পক্ষ থেকে তার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয় এবং সানির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানানো হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, মসজিদের মতো পবিত্র স্থানে এমন ন্যাক্কারজনক হামলা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এদিকে, সানির গ্রেফতারের পর তার রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিচয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন পরিচিত সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত, যা তার কর্মকাণ্ডকে আরও জটিল করে তুলছে। তবে, পুলিশের দাবি, এ ঘটনায় রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনা পিরোজপুরের জনসাধারণের মধ্যে শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এমন ঘটনা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, এবং সরকারের উচিত দ্রুত এ ধরনের অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা।