রিপোর্ট মেহেদী হাসান: নরসিংদীর মাটিতে জন্ম নেওয়া সুমিষ্ট মৌসুমি ফল লটকন এবার পেল আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি। শুধু স্বাদেই নয়, এবার স্বীকৃতিতেও দেশের অন্যতম কৃষিপণ্য হয়ে উঠল এই লটকন।
আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে নরসিংদীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে জিআই নিবন্ধনের সনদ তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর (DPDT) শিল্প মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে। অনুষ্ঠানে নরসিংদীর লটকনের পাশাপাশি আরও কয়েকটি জেলার ঐতিহ্যবাহী পণ্যকেও জিআই সনদ প্রদান করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে মধুপুরের আনারস, মির্জাপুরের সন্দেশ, ভোলার কাঁচা দই, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী মিষ্টি, সুন্দরবনের মধু, মাগুরার হাজরাপুরী লিচু এবং কিশোরগঞ্জের রাতা বোরো ধান।
নরসিংদীর এই ঐতিহ্যবাহী ফলের গুণগত মান ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (EDC) সহযোগিতায় ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট আবেদন নম্বর GI-50 অনুযায়ী DPDT-তে আনুষ্ঠানিকভাবে জিআই স্বীকৃতির আবেদন জমা দেওয়া হয়।
এরপর ২০২৪ সালের ৮ মার্চ “ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩” অনুযায়ী এটি জিআই জার্নাল-৩১ এ প্রকাশিত হয়। এর মাধ্যমে নরসিংদীর লটকন পরিণত হয় বাংলাদেশের ৩২তম নিবন্ধিত জিআই পণ্য হিসেবে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ স্বীকৃতি কেবল কাগজে-কলমে নয় — এটি নরসিংদীর কৃষি, কৃষক এবং স্থানীয় অর্থনীতির জন্য একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই জিআই স্বীকৃতি লটকনের রপ্তানির নতুন দ্বার উন্মোচন করবে, বাড়াবে আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা ও মূল্য।
জিআই সনদ মানেই গর্ব, সম্ভাবনা ও ভবিষ্যতের দরজা খুলে যাওয়া। এটি প্রমাণ করে — বাংলাদেশের স্থানীয় কৃষিপণ্যও সততা, মান ও ঐতিহ্য দিয়ে বিশ্বদরবারে জায়গা করে নিতে পারে।