২৪ ও ২৫ জুন নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ ন্যাটো সম্মেলন। এই সম্মেলনে বিশ্ব নিরাপত্তা, সামরিক ও কূটনৈতিক সংকটসহ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। তবে এই সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরু এবং দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়াং। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইরানে সামরিক হামলার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের অফিসের এক মুখপাত্র জানান, লি জে-মিয়াং এই সম্মেলনে অনুপস্থিত থাকার দুইটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরীণ নানাবিধ বিষয় এবং দ্বিতীয়ত, মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি। এ সময় দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পরিচালনায় তাকে মনোযোগ দিতে হচ্ছে।
অন্যদিকে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবা শিগেরুর অফিস জানিয়েছে, নানা পরিস্থিতির কারণে শিগেরু সফর বাতিল করেছেন। বর্তমানে জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে নানা স্মরণ অনুষ্ঠান পালন করছে। এর মধ্যে রয়েছে ওকিনাওয়া যুদ্ধের বার্ষিকী, যেখানে প্রায় ২ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল, যাদের বেশির ভাগ সাধারণ নাগরিক। এছাড়াও আগস্টে নাগাসাকি ও হিরোশিমায় পারমাণবিক হামলার বার্ষিকী পালিত হবে। এই সব স্মরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে উপস্থিত থাকতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ন্যাটো সম্মেলনে যদিও জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া সদস্য দেশ নয়, তারা অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ আমন্ত্রিত চার দেশের মধ্যে ছিল। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজও জানিয়েছেন, তিনি নিজে সম্মেলনে যোগ দিতে পারবেন না।
তবে তিন দেশের সরকার প্রধানরা তাদের প্রতিনিধিদের সম্মেলনে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। এতে তারা ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ বজায় রাখবেন।
এ বিষয়ে ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুটে সোমবার (২৩ জুন) বলেন, দ্য হেগে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলন ন্যাটোর ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। প্রথমবারের মতো নেদারল্যান্ডস এই সম্মেলনের আয়োজক। এতে ন্যাটো জোটভুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানরা অংশগ্রহণ করবেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলমান বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় ন্যাটো সদস্য দেশগুলো একত্রিত হয়ে শক্ত অবস্থান প্রদর্শন করবে।
বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা পরিস্থিতির এই জটিল সময়ে ন্যাটো সম্মেলনের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার প্রধানদের অনুপস্থিতি সম্মেলনের চ্যালেঞ্জ বাড়িয়েছে। তারা প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট রাখার চেষ্টা করছেন। আগামী দুই দিনে সম্মেলন থেকে পাওয়া সিদ্ধান্ত বিশ্ব রাজনীতির জন্য বড় প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।