পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার সাতখামার গ্রামে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল হক, যিনি ছিলেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের পিতা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে ও তিন কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুসংবাদ এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে বোদাসহ আশপাশের এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
জানাজা এবং দাফন:
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মরহুমের নামাজে জানাজা শুক্রবার (১৬ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় বোদা উপজেলার এগারো মাইল প্রামানিক গোরস্থানের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজার পর তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। এতে রাজনৈতিক, সামাজিক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
অসাধারণ জীবন:
আমিনুল হক কেবল একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, বরং শিক্ষাক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন একজন সম্মানিত ব্যক্তি। ঠাকুরগাঁও জেলার মুন্সিরহাট হাই স্কুলের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক হিসেবে তিনি দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর সততা, নিষ্ঠা ও পাণ্ডিত্য তাকে ছাত্র ও সহকর্মীদের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয় করে তোলে।
পৈতৃক পরিচয়:
তিনি বোদা পাইলট হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আলহাজ আলাউদ্দিন আহমেদের চতুর্থ সন্তান ছিলেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় তিনি শিক্ষা ও সমাজসেবায় ব্যাপকভাবে জড়িত ছিলেন।
চিরবিদায়:
একজন দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধা ও আদর্শ শিক্ষক হিসেবে আমিনুল হক যে অবদান রেখে গেছেন, তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর মৃত্যুতে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাজীবী সমাজ এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
শেষ কথা:
একজন যোদ্ধা চলে গেলেন, যিনি অস্ত্র হাতে দেশ রক্ষা করেছেন, আবার কলম হাতে গড়েছেন শত শত ভবিষ্যৎ। তাঁর মৃত্যু নিঃসন্দেহে একটি বড় শূন্যতা তৈরি করলো পরিবার, সমাজ ও দেশের জন্য। জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে এই নিরহঙ্কার শিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।