close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামের বাড়িতে আ গু ন

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ঘোষিত সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়িতে ফের অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। রাতের আঁধারে খড় ও লাকড়ির ঘরে আগুন দিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছে—পরিবার বলছে, এটি পরিকল..

পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাতখামার গ্রামে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ঘোষিত সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির পাশে থাকা একটি খড়ের ঘরে সোমবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনাস্থল থেকে জানা যায়, সাদ্দামের বাড়ির মূল প্রাচীরঘেঁষা একটি টিনশেড ঘর, যেটি খড় ও লাকড়ি রাখার কাজে ব্যবহৃত হতো—সেখানেই প্রথমে আগুন দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন দেখতে পেয়ে প্রথমে নিজেরাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে খবর পেয়ে বোদা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

অগ্নিকাণ্ডে ঘরের পুরো খড় ও কাঠ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যদিও সাদ্দামের মূল বসতবাড়ি অক্ষত রয়েছে, তবে পরিবারটির ভাষ্যমতে—‘যদি আগুন আরও কিছুক্ষণ ছড়িয়ে পড়ত, তাহলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারতো।’

সাদ্দামের মা আনোয়ারা বেগম এ ঘটনায় আতঙ্ক প্রকাশ করে বলেন, “রাতের গভীরে কে বা কারা আগুন দিয়েছে। প্রতিবেশীরা প্রথমে আগুন দেখে চিৎকার করেন। আমরা ছুটে এসে দেখি আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পরে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আমার স্বামী বিছানায় পড়ে আছেন তিন বছর ধরে, আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”

সাদ্দামের বড় ভাই প্রিন্স বলেন, “রাত ১টার দিকে বাড়ির উত্তর পাশের ঘরে আগুন লাগে। চাচাতো ভাইয়ের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘর জ্বলছে। দ্রুত বাবা-মা ও সন্তানদের নিয়ে ঘর ছাড়ি। গ্রামের মানুষ, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু আমরা এখনো আতঙ্কে আছি।”

ঘটনার পরপরই আটোয়ারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিরাপত্তা জোরদার করে। থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম সরকার জানান, “ঘটনার পর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। কে বা কারা এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে জড়িত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

বোদা ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউস ইন্সপেক্টর রায়হান ইসলাম জানান, “ঘরটি ছিল প্রায় ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১০ ফুট প্রস্থের টিনের তৈরি। আগুনে সব পুড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী প্রায় ১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”

উল্লেখ্য, এর আগেও সাদ্দাম হোসেনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট ক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে। সেই সময় পুরো বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায় বলে দাবি করেন পরিবারের সদস্যরা। তখন ঘরে থাকা নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকারও লুট হয়ে যায় বলেও অভিযোগ উঠে।

বারবার এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পরিবারটি মনে করছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়—বরং পরিকল্পিত হামলার ধারাবাহিকতা। তাদের দাবি, রাজনৈতিক কারণে তারা টার্গেট হচ্ছেন। এখন প্রশাসনের কাছে তাদের একমাত্র প্রত্যাশা—সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের আইনের আওতায় আনা।

সামাজিকভাবে প্রভাবশালী এই পরিবারের নিরাপত্তা প্রশ্নে এলাকায় নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, বারবার একই পরিবারে আগুন লাগার ঘটনা কাকতালীয় নয়—এতে অবশ্যই গভীর ষড়যন্ত্র লুকিয়ে আছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত তদন্ত করে প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা।

No comments found


News Card Generator