close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা এখন কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে ছাত্রলীগের সাবেক বিতর্কিত নেতাকে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি করায় দলে তীব্র ক্ষোভ ও সমালোচনা। ভাইরাল হয়েছে দুই দলের ফুল দিয়ে বরণ করার ছবি। এই সিদ্ধান্তে ছাত্রদলের অভ্যন্তরে বিস্ফোরণ ঘ..

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এখন ছাত্রদল সভাপতি! শাহজাদপুরে কমিটি গঠনে তীব্র বিতর্ক

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও তীব্র বিতর্ক। কারণ, এই কমিটির সভাপতি করা হয়েছে এমন একজনকে যিনি কয়েক বছর আগেও ছিলেন ছাত্রলীগের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি। তার নাম মো. সাব্বির হোসেন।

সম্প্রতি সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রদল শাহজাদপুর সরকারি কলেজ শাখার ৮ সদস্যের একটি আংশিক কমিটির অনুমোদন দেয়। এই কমিটির সভাপতি হিসেবে সাব্বির হোসেনের নাম ঘোষণা হতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা ও আলোচনা।

একই ব্যক্তি, দুই দলের ফুলেল শুভেচ্ছা!

ছাত্রদল সভাপতি হওয়ার কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ছবিতে দেখা যায়, সাব্বির হোসেনকে ফুল দিয়ে বরণ করছেন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতারা। আর এরপর যখন তিনি ছাত্রদলের সভাপতি হন, তখন বিএনপি নেতারাও তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।

এই দ্বৈত পরিচয়ে অনেকেই হতবাক। সংগঠনের ত্যাগী ও আদর্শিক কর্মীরা মনে করছেন, এটি ছাত্রদলের জন্য একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল

সাব্বির হোসেনের ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার একাধিক ছবি, এমনকি তার নামসহ ছাত্রলীগের কমিটি প্যাড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে ছাত্রদলের নতুন কমিটির প্যাডও ভাইরাল হয়। ফলে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ।

নেতারা কী বলছেন?

ছাত্রদলের একজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “সংগঠনে বহু ত্যাগী কর্মী থাকা সত্ত্বেও একজন ছাত্রলীগ নেতাকে এমন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া আমাদের জন্য অপমানজনক। এতে দলের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।”

শাহজাদপুর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাজাহার হোসেন বলেন, “সাব্বির হোসেন আগে ছাত্রলীগ করত, সেটা সত্য। তবে তাকে কখনো আমাদের দলে সক্রিয়ভাবে দেখা যায়নি। কমিটিতে সে কীভাবে এলো, সেটাও আমাদের জানা নেই।”

উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আল মামুন হোসেন জুয়েল জানান, “সাব্বির হোসেন ছাত্রলীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে চলাফেরা করত, তবে সে কোনো নির্দিষ্ট পদে ছিল না।”

 সাব্বির হোসেনের সাফাই

নতুন সভাপতি সাব্বির হোসেন তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, “আমি তখন এলাকার এক ভাইয়ের সঙ্গে ছাত্রলীগের একটি প্রোগ্রামে গিয়েছিলাম। ছবি ওঠে গিয়েছিল, এতে আমার দায় কী? প্যাডে যে নাম আছে, সেটা আমার না। এরপর আমি ছাত্রদলে যোগ দিয়েছি, তখন থেকে আমি সক্রিয়।”

আওয়ামী লীগের সঙ্গে তার তুলনামূলক ঘনিষ্ঠতার প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমার ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি রাসেলকে সংবর্ধনা দিতে গিয়েছিল, আমি তার সঙ্গে গিয়েছিলাম। সেখানেই ছবি তোলা হয়েছে।”

 বিএনপি নেতার মন্তব্য

শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আরিফ বলেন, “কমিটি কীভাবে গঠন হয়েছে, তা আমি জানি না। সাব্বির হোসেনের কিছু ছবি ফেসবুকে দেখেছি, কিন্তু সে যে ছাত্রলীগ করত তার প্রমাণ আমাদের কাছে নেই। তবে সাম্প্রতিক আন্দোলনে সে আমাদের সঙ্গেই ছিল।”

উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন হীরু বলেন, “সে অনেক আগে ছাত্রলীগে ছিল, ২০২০ সালের কমিটিতে তার নাম ছিল। তবে চলতি আন্দোলনের আগে সে ছাত্রদলে যোগ দিয়েছে। আমরা যাচাই-বাছাই করেই তাকে পদ দিয়েছি।”


রাজনৈতিক দলবদল নাকি কৌশলী infiltration?

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—ছাত্রদল কি অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণ না করেই এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছে? নাকি এটি একটি সুপরিকল্পিত infiltration—যেখানে প্রতিপক্ষের নেতাকে নিজের দলে এনে বিভ্রান্তি ও বিভাজন সৃষ্টি করা উদ্দেশ্য?

No comments found


News Card Generator