ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই সনদ অনুযায়ী গণভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় বসছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এন নাসির উদ্দিন। আগামী রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর প্রধানগণ উপস্থিত থেকে নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তা কৌশল নিয়ে আলোচনা করবেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, দুপুর ১২টায় তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সিইসির আনুষ্ঠানিক বৈঠক শুরু হবে। এরপর দুপুর আড়াইটায় দেশের অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় সভা করবেন তিনি। এই জোড়া সভার মূল লক্ষ্য হলো নির্বাচন-পূর্ব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা এবং যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে একটি সমন্বিত নিরাপত্তা পরিকল্পনা প্রণয়ন করা।
সিইসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য এই সভায় নির্বাচন কমিশনাররা ছাড়াও সশস্ত্র বাহিনী এবং পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। সভা শেষে তারা যৌথভাবে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হবেন। সেখানে তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান এবং নির্বাচনকালীন যৌথ বাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত ব্রিফিং দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রার্থীদের নিরাপত্তা এবং সাধারণ ভোটারদের মাঝে আস্থার পরিবেশ তৈরি করার বিষয়টি এখানে গুরুত্ব পাবে।
সভার আলোচ্যসূচিতে আরও রয়েছে ‘আচরণবিধি ২০২৫’ এর কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা। নির্বাচনী প্রচারণার সময় রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা যেন নিয়ম মেনে চলেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে। এছাড়া সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধে দেশব্যাপী যৌথ বাহিনীর চলমান অভিযান আরও বেগবান করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হতে পারে। মূলত একটি উৎসবমুখর ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন আয়োজনই এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য।
উল্লেখ্য, গত ১১ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে সিইসি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে একযোগে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় আগামী ২৯ ডিসেম্বর। ইতিমধ্যে মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে, যা নিয়ন্ত্রণে রাখাই এখন কমিশনের বড় চ্যালেঞ্জ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এবারের নির্বাচন এবং গণভোট বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তাই তিন বাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণ ও তদারকি ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে উৎসাহিত করবে। সিইসির এই উদ্যোগকে তাই একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।



















