close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

নির্বাচন চাইছে একমাত্র একটি দল, বাকিরা নয়: টান টান উত্তেজনার মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টার স্পষ্ট বার্তা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন দোলাচল, তখনই প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানালেন, সব দল নয়—শুধুমাত্র একটি দল ডিসেম্বরেই ভোট চায়। জাপানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ফোরামে এই মন্তব্য ঘিরে দেশজুড়..

জাতীয় নির্বাচন কোন সময় হবে—এই প্রশ্নে যখন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত, তখনই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দিলেন এক স্পষ্ট, কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা। তিনি জানালেন, "দেশের সব রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায় না; বরং একটি নির্দিষ্ট দলই এ সময় ভোট চায়।"

ড. ইউনূস এই বক্তব্য দেন টোকিওতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন "নিক্কেই ফোরাম: ফিউচার অব এশিয়া"-তে, এক প্রশ্নোত্তর পর্বে। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং বেশ কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল তাঁর এই বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার করে, যা দেশে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

উক্ত পর্বে ড. ইউনূস ব্যাখ্যা করেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার মূলত তিনটি লক্ষ্য সামনে রেখে কাজ করছে—সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। এ তিন স্তম্ভের উপর ভর করেই নির্ধারিত হবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি।

তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের জুনের মধ্যেই হতে পারে। তবে তা চলতি বছরের ডিসেম্বরেও অনুষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। সবকিছু নির্ভর করছে কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার কতদূর বাস্তবায়িত হয়েছে, তার ওপর।”

ড. ইউনূস তাঁর বক্তব্যে ইঙ্গিত দেন যে, সরকার চাইলে ডিসেম্বরেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। তবে সে ক্ষেত্রে দেশের প্রশাসনিক কাঠামোকে শুধুমাত্র তার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিয়ে যেতে হবে। আর যদি প্রকৃতপক্ষে একটি দীর্ঘমেয়াদী ও কার্যকর সংস্কার কাঠামো গড়ে তুলতে হয়, তবে সময় লাগতে পারে আরও ছয় মাস

তাঁর কথায়, “আমরা যদি শুধু আগের অবস্থানেই ফিরিয়ে দেই, তাহলে ডিসেম্বরেই নির্বাচন সম্ভব। আবার কিছু সংস্কার করে অবশিষ্ট কাজগুলো পরবর্তী সরকারের হাতে তুলে দিতেও ডিসেম্বরেই ভোট হতে পারে। কিন্তু আমরা যদি সত্যিকার অর্থে একটি শক্তিশালী সংস্কার কাঠামো তৈরি করতে চাই, তাহলে আগামী জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করাটাই হবে বাস্তবসম্মত।”

তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, “বর্তমানে যারা ডিসেম্বরেই নির্বাচন চাচ্ছে, তারা কিন্তু দেশের সব রাজনৈতিক দল নয়। বরং শুধুমাত্র একটি দল এই দাবি করছে। বাকিদের অবস্থান ভিন্ন।”

এই বক্তব্যের পরপরই রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। অনেকে বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার এই মন্তব্যে বোঝা যাচ্ছে, নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান এখনো চূড়ান্ত হয়নি, বরং তারা সময় নিচ্ছে বাস্তবতা মূল্যায়নের জন্য।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ড. ইউনূসের এই বক্তব্য ভবিষ্যতের নির্বাচনী সময়সূচির পূর্বাভাস হলেও এটি এক ধরনের সতর্ক বার্তাও বটে। কারণ, কোনো নির্দিষ্ট দলের চাপেই নির্বাচন এগিয়ে আনার প্রবণতা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

উপসংহার:
প্রধান উপদেষ্টার জাপানে দেওয়া এই বক্তব্য এখন দেশে নানা ধরনের ব্যাখ্যা তৈরি করছে। কিছু রাজনৈতিক দল একে ‘সাবধানীকতা’, কেউ কেউ ‘নীতিহীনতা’, আবার অনেকে একে দেখছেন সরকারের ‘কৌশলগত অবস্থান’ হিসেবে। তবে যাই হোক না কেন, এই বক্তব্য নির্বাচনের সময়কাল এবং রাজনৈতিক সংলাপের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

Walang nakitang komento