close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

নীলফামারীতে ট্রেনে কা টা পড়ে মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নি হ ত

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় নীলফামারীতে মোটরসাইকেল আরোহী দুই ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। সকালবেলার এ দুর্ঘটনায় এলাকা জুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।..

নীলফামারীর পলাশবাড়ি এলাকায় আজ ভোরে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, যা এলাকাবাসীকে শোকাহত করেছে। অরক্ষিত রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছেন মোটরসাইকেলের দুই আরোহী। বুধবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সদরের জ্ঞানদাশ কানইকাটা তেঁতুলতলা রেলঘুমটি এলাকায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের একজনের নাম সন্তোষ (৫০), যিনি নীলফামারী সদরের দলুয়ার চাওড়া বড়গাছা এলাকার শ্রীকাল্টুর ছেলে। অপরজন ভবেশ, যিনি একই এলাকার শেল্টুর ছেলে। তারা একসঙ্গে মোটরসাইকেলে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন বলে জানা যায়।

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল নবী দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি চিলাহাটি থেকে ছেড়ে ঢাকা অভিমুখে যাচ্ছিল। এ সময় মোটরসাইকেলটি অরক্ষিত রেলক্রসিং পার হওয়ার চেষ্টা করছিল। ঠিক তখনই দ্রুতগতির ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়। ট্রেনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।”

স্থানীয়রা জানান, দুর্ঘটনাস্থলে রেলক্রসিংটিতে কোনো গেইট বা গার্ড ছিল না। ফলে বারবার এমন ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এই রেলক্রসিং দিয়ে প্রতিনিয়ত বহু মানুষ চলাচল করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নেই কোনো কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দুর্ঘটনার পর এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, “ট্রেনটা দূর থেকে আসতে দেখা গেলেও আরোহীরা হয়তো সময়মতো সেটি বুঝতে পারেননি। মুহূর্তেই ট্রেন এসে ধাক্কা দেয়। এমন মর্মান্তিক দৃশ্য আমরা আগে কখনো দেখিনি।”

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং রেল কর্তৃপক্ষের প্রতি দ্রুত গেইট স্থাপন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানান তারা।

এ বিষয়ে ওসি মাহমুদুল নবী আরও বলেন, “আমরা নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

রেললাইনসংলগ্ন এই অরক্ষিত রেলক্রসিং দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হলেও প্রশাসনিক উদাসীনতায় তা রয়ে গেছে আগের মতোই। দুর্ঘটনার পর এলাকাবাসী তাৎক্ষণিকভাবে রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং রেল লাইনে অস্থায়ী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে নিরাপত্তার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে—এই অরক্ষিত রেলক্রসিং কবে নিরাপদ হবে? আর কত প্রাণ গেলে জেগে উঠবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ?

এমন করুণ মৃত্যু যেন আর কারো না হয়—এই প্রত্যাশাই এখন এলাকাবাসীর।

No comments found


News Card Generator