close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতে ইসলামীর আপিলের রায় রোববার

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দীর্ঘ এক যুগের আইনি লড়াইয়ের পর জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারিত হতে যাচ্ছে রবিবার। নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম উত্তেজনা!..

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ও প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ ফিরে পাবে কি না—সে বিষয়ে বহুল প্রতীক্ষিত রায় ঘোষণা করবে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আগামী রবিবার (১ জুন) সকালে এ রায় ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন মামলার অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ-এর নেতৃত্বে চার বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত আপিল বেঞ্চে এই রায় ঘোষিত হবে। জানা গেছে, জামায়াতের নিবন্ধন মামলা কার্যতালিকার শীর্ষে রয়েছে, অর্থাৎ এটাই হতে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের দিনটিতে প্রথম রায়।


আইনি প্রক্রিয়া: দীর্ঘ পথের শেষ ধাপে

এই মামলার শুনানি শেষ হয় গত ১৪ মে, যেখানে জামায়াতের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, এবং ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। শুনানিকালে আদালতে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও।

উল্লেখযোগ্যভাবে উপস্থিত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসেন, এবং ঢাকা মহানগরের নেতারা।


অতীতের পটভূমি: কিভাবে বাতিল হলো নিবন্ধন?

২০১৩ সালের ১ আগস্ট, হাইকোর্ট একটি রিট আবেদনের রায়ে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর, নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রজ্ঞাপন জারি করে দলটির নিবন্ধন সম্পূর্ণভাবে বাতিল করে দেয়।

জামায়াত এরপর সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে, যা খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু ২০২3 সালের ২২ অক্টোবর, সেই খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করে দেয় আপিল বিভাগ। এর ফলে দলের আইনি লড়াই নতুনভাবে শুরু হয়, যার ফলাফল জানতেই এখন অপেক্ষা করছে পুরো জাতি।


শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া

চূড়ান্ত রায়কে সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা আলোচনা। আইনজীবী শিশির মনির জানান, “আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আদালত ন্যায়বিচার করবে। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর সত্যের জয় হবে বলেই আশা করছি।”

অন্যদিকে, নাগরিক সমাজের একাংশ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলছেন, “এই রায়ের প্রভাব শুধু একটি দলের নিবন্ধনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল গঠনের বৈধতা, ধর্মভিত্তিক রাজনীতির অবস্থান ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকনির্দেশনা দেবে।”


আদালত কক্ষে কারা ছিলেন?

শুনানিকালে আদালতে জামায়াতের পক্ষে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন:

  • মাওলানা এ টি এম মাছুম (ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল)

  • অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের (সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল)

  • অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল

  • অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ

  • মোবারক হোসেন

  • নুরুল ইসলাম বুলবুল (ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আমির)

  • মো. সেলিম উদ্দিন (উত্তর আমির)

  • ড. হেলাল উদ্দিন (দক্ষিণ নায়েবে আমির)


কী ঘটবে রায়ের পর?

রায়ের মাধ্যমে যদি জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল হয়, তবে দলটি আবারও জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে তাদের প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ নিয়ে। অন্যদিকে, আবেদন খারিজ হলে দলটির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ হবে মারাত্মক অনিশ্চিত।

এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের ফলাফল জানা যাবে আগামীকাল সকালেই। একদিকে জামায়াতের রাজনৈতিক পুনর্জন্মের সম্ভাবনা, অন্যদিকে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রশ্নে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের অবস্থান—সবমিলিয়ে রোববারের রায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে চলেছে।

No comments found


News Card Generator