close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

নি দ্ধ আওয়ামী লীগ পালিয়েছে বলায় বিএনপির ৪ কর্মীকে কু পি য়ে জ খ ম..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কুমিল্লার মুরাদনগরে 'আওয়ামী লীগ পালিয়েছে' মন্তব্য করায় বিএনপির চার নেতাকর্মীর ওপর ছুরি ও চাপাতি দিয়ে হামলা চালায় স্থানীয় আওয়ামী লীগপন্থী দুর্বৃত্তরা। একজন আইসিইউতে, বাকিরাও গুরুতর অবস্থায় চি..

কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায় রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন একটি রক্তাক্ত অধ্যায় রচিত হয়েছে। একটি কথাকাটাকাটির জেরে শনিবার (১০ মে) রাতে বিএনপির চারজন নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করেছে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট একটি দুর্বৃত্তচক্র। আহতদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা এভারকেয়ার হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি তিনজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পূর্ব ধইর পশ্চিম ইউনিয়নের নবিয়াবাদ গ্রামে। আহতরা হলেন—নবিয়াবাদ গ্রামের বিএনপি নেতা ও জিয়া মঞ্চের সদস্যসচিব জুয়েল মিয়া, তার ছেলে সৌরভ, একই গ্রামের বিএনপি কর্মী জাহের মিয়ার ছেলে জাহিদুল ও ইউনুস মিয়ার ছেলে শাকিল। তাদের মধ্যে জাহিদুলের অবস্থা সবচেয়ে গুরুতর; তার একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ছুরির আঘাত রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সূচনা হয়েছিল ৩ মে। ওই দিন বাঙ্গরায় বিএনপির একটি রাজনৈতিক সমাবেশে অংশ নিতে যাওয়ার পথে জুয়েলের ছেলে সৌরভের সঙ্গে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মানিক মিয়ার ছেলে জিহাদের বাকবিতণ্ডা হয়। বাকবিতণ্ডার কেন্দ্রে ছিল একটি মন্তব্য—"আওয়ামী লীগ পালিয়েছে"। এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ঝগড়া শুরু হয় এবং পরে তা সামাজিকভাবে আপস-মীমাংসা হলেও ক্ষোভ রয়ে যায়।

এই পূর্ব শত্রুতার জেরেই শনিবার রাত ৯টার দিকে নবিয়াবাদ মাদ্রাসার সামনে জিহাদ ও তার ভাই জিসান নেতৃত্বে ৫-৬ জনের একটি সশস্ত্র দল সৌরভের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। সৌরভকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তার বাবা জুয়েল, চাচা শাকিল এবং প্রতিবেশী বিএনপি কর্মী জাহিদুলকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে তারা।

চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এসে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে জাহিদুলের অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

আহত জুয়েলের ভাই হাবীবুর রহমান বলেন, "ছেলেদের মধ্যে যে ঝগড়া হয়েছিল, তা এলাকার গণ্যমান্যদের মধ্যস্থতায় সমাধান হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তারপরও এমন ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা। জাহিদুলের একটা চোখ নষ্ট হয়ে গেছে, সে এখন ঢাকায় আইসিইউতে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।"

ঘটনার পর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। তাদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, হামলাকারীরা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় দাপট চালিয়ে আসছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান জানান, “ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এই ঘটনা শুধু একটি রাজনৈতিক সংঘাত নয়, বরং দেশের বর্তমান উত্তপ্ত রাজনৈতিক বাস্তবতায় মত প্রকাশের স্বাধীনতা কতটা হুমকির মুখে তা আবারও স্পষ্ট হলো। একটিমাত্র রাজনৈতিক মন্তব্য, 'আওয়ামী লীগ পালিয়েছে', আজ চারটি জীবন ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

Tidak ada komentar yang ditemukan