close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

নি'ষি'দ্ধ ছাত্রলীগ নেতা প্রেমিকাকে কুপিয়ে নিজেকে ছুরিকাঘাত করেছে..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিয়ের আগের রাতে এক বিভৎস কাহিনি! প্রেমিকার বিয়ের খবর শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরি হাতে হাজির হন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। প্রেমিকাকে রক্তাক্ত করে নিজের বুকেও ছুরি চালালেন! ঘটনার শেষ হলো হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে। ক..

সুনামগঞ্জ শহরের হাছননগর এলাকাজুড়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক ভয়াবহ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থ প্রেমিকাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করার পর নিজেকেও ছুরিকাঘাত করেন।

জানা যায়, দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকা এই ছাত্রলীগ নেতা সিলেটে আত্মগোপনে থাকার পর হঠাৎ সুনামগঞ্জ শহরে উপস্থিত হন। তার টার্গেট ছিল তার সাবেক প্রেমিকা, যিনি বর্তমানে সুনামগঞ্জের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। মেয়েটির আসন্ন বিয়ের খবর জানার পরই তার মধ্যে উন্মত্ত প্রতিহিংসার আগুন জ্বলে ওঠে।


কীভাবে ঘটল রক্তাক্ত প্রেমের এই মর্মান্তিক দৃশ্য?

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে দুজনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলেও এক পর্যায়ে তা ভেঙে যায়। মেয়েটির পরিবারের পছন্দে বিয়ের আয়োজন চলছিল। বিয়ের দিন ঠিক করা হয়েছিল ১ জুন। বিয়ের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মেয়েটি ভাইয়ের বাসায় অবস্থান করছিল।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পার্লারে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হলে পার্থ তাকে গোপনে অনুসরণ করে। এরপর শহরের হাছননগর এলাকার একটি মার্কেটের কাছে তাকে ডেকে নিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে একাধিক আঘাত করে।

মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে পার্থ সেখান থেকে পালিয়ে যান। তাকে পরে শহরের ধোপাখালী শ্মশানঘাট এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ।


‘ভালোবাসা’ থেকে হুমকি, আর শেষে মৃত্যুপ্রয়াস

মেয়েটির পরিবারের ভাষ্যমতে, সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরেও পার্থ তাকে নিয়মিত হুমকি দিতেন। পরিবার থেকে বিষয়টি পার্থর আত্মীয়দের জানানো হলেও তাতে কোনো ফল হয়নি, বরং সে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।

ঘটনার দিন মেয়েটিকে গোপনে অনুসরণ করে, এবং সুযোগ বুঝে তার ওপর হামলা চালায়। ছুরিকাঘাতে মেয়েটি গুরুতর আহত হলে তাকে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল, পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

পার্থ নিজেও পালিয়ে গিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে — ধোপাখালী শ্মশানঘাট এলাকায় নিজের পেটে ছুরি চালায়। তাকেও পুলিশ দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছেন।


পুলিশের বক্তব্য

সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মনিবুর রহমান বলেন,

“ছেলেটি মেয়েটিকে কুপিয়ে পরে নিজের শরীরেও ছুরি চালায়। আমরা খবর পেয়ে দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করি এবং দুজনকেই হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”


সামাজিক প্রতিক্রিয়া

ঘটনাটি শহরজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সাবেক ছাত্রনেতার এমন নৃশংস আচরণে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—রাজনীতি ও প্রেমের নামে কীভাবে এমন সহিংস মনোভাব গড়ে ওঠে?

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহপাঠীরাও জানাচ্ছেন, পার্থ একসময় ক্যাম্পাসে প্রভাবশালী ছিলেন, কিন্তু পরবর্তী সময়ে তার আচরণে উগ্রতা দেখা যায়।

এই রক্তাক্ত প্রেম কাহিনি কেবল একটি মেয়ের শারীরিক ক্ষতি নয়, বরং আমাদের সমাজে ক্রমবর্ধমান সহিংস মানসিকতার এক জ্বলন্ত উদাহরণ। পার্থর মতো শিক্ষিত একজনের এমন কাণ্ড যুবসমাজের জন্য একটি ভয়াবহ বার্তা।

এ ঘটনায় প্রেম, প্রতিশোধ, সহিংসতা আর আইনশৃঙ্খলার বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। কী হবে এই ঘটনার পরিণতি? আইনের হাতে সোপর্দ হওয়া এই ‘প্রেমিক’ কীভাবে শাস্তি পাবে — এখন সেটাই দেখার বিষয়।

کوئی تبصرہ نہیں ملا


News Card Generator