মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদ লিমিটেডের কার্যক্রমে বিশাল আর্থিক অনিয়মের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানান, নগদে ২,৩০০ কোটি টাকার অনিয়ম চিহ্নিত হয়েছে, যার মধ্যে ৬০০ কোটি টাকা অবৈধ ইলেকট্রনিক মানি (ই-মানি) তৈরি হয়েছে।
রোববার রাজধানীর গুলশানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট আয়োজিত সেমিনারে গভর্নর এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “নগদে পরিচালনায় আমরা গুরুতর অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছি। সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে অতিরিক্ত ই-মানি তৈরি এবং সরকারি ভাতা বিতরণে গাফিলতি পাওয়া গেছে। এগুলোর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে।”
প্রকাশ্যে আসা অনিয়ম
বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো এমএফএস প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের জমাকৃত নগদ অর্থের সমান ইলেকট্রনিক মানি তৈরি করতে পারে। তবে নগদ প্রকৃত টাকার চেয়ে বেশি ই-মানি তৈরি করেছে। পাশাপাশি সরকারি বয়স্ক ভাতা, উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন ভাতার অর্থ বিতরণ না করে অন্য খাতে সরানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গভর্নর আরো বলেন, “নগদে অডিট চলছে এবং এর কার্যক্রম পুনর্গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসক বসানো হতে পারে, যা বিকাশের মতো প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।”
নগদের বিতর্কিত যাত্রা
২০১৯ সালের ২৬ মার্চ যাত্রা শুরু করা নগদ শুরু থেকেই বিতর্কের মধ্যে ছিল। এটি বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সেবা হিসেবে পরিচিত হলেও, ডাক বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স পাওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
টেকসই ভবিষ্যতের আহ্বান
ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল ব্যবস্থাকে টেকসই করতে নতুন বিনিয়োগ প্রয়োজন উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, “টেলিকম খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তা না হলে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা ও উন্নত ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবা সম্ভব হবে না।”
সতর্কতা ও পুনর্গঠন পরিকল্পনার আওতায় নগদের কার্যক্রম স্বচ্ছ ও নিয়মিত করতে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই অনিয়মের ঘটনা দেশের ডিজিটাল আর্থিক সেবার উপর গভীর প্রশ্ন তুলেছে।
Tidak ada komentar yang ditemukan