রাজনীতির উত্তপ্ত মঞ্চে ফের বিতর্কের আগুন জ্বালালেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। শনিবার (২৪ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, নাহিদ ইসলাম ছাত্র উপদেষ্টাদের প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে ‘চরম মিথ্যা’ বক্তব্য দিয়েছেন।
রাশেদ খান তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া পোস্টে লেখেন, “নাহিদ ইসলামকে আমি গণআন্দোলনের অন্যতম প্রতিভাধর নেতা হিসেবে সবসময় শ্রদ্ধা করে এসেছি। কিন্তু আজ সে যে বক্তব্য দিয়েছে, তা চরমভাবে মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর। তার নিজের দলের নেতাকর্মীরাও জানেন, সে আজ সত্যকে বিকৃত করেছে। এমনকি সংবাদ সম্মেলনে তার পাশে যারা ছিলেন, তারাও বাস্তবতা সম্পর্কে অবগত।”
তিনি অভিযোগ করেন, দুই ছাত্র উপদেষ্টা— মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের সঙ্গে ন্যাশনাল কনসেনসাস পার্টির (এনসিপি) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে, এবং সেই সম্পর্ক একান্ত ব্যক্তিগত নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে জড়িত। “এনসিপি গঠনের প্রথম পর্যায় থেকে নাহিদ ইসলাম, মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন,” বলেন রাশেদ খান।
তার দাবি, মন্ত্রীপাড়ায় নাহিদ ইসলামের বাসভবন ছিল এনসিপি’র প্রাথমিক বৈঠক ও নীতিনির্ধারণের কেন্দ্রস্থল। “সেখানে গোপনে নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। এটি কারও অজানা নয়। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও এর বিস্তারিত তথ্য রয়েছে,” বলেন তিনি।
নাহিদের বক্তব্যকে “দুঃখজনক ও হতাশাজনক” আখ্যা দিয়ে রাশেদ খান আরও বলেন, “যেভাবে সে দুই উপদেষ্টাকে প্রকাশ্যে অস্বীকার করেছে, তাতে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে— ভবিষ্যতে আর কতোজনকেই সে এমনভাবে অস্বীকার করবে? এমনকি আমার দলের কিছু সদস্যকেও এনসিপি দলে টানার জন্য আসিফ মাহমুদ বিভিন্ন সময় ফোন করেছে, বৈঠক করেছে এবং বার্তা পাঠিয়েছে।”
রাশেদ খান উল্লেখ করেন, “আমি সবসময় সত্যকে গুরুত্ব দিই। আমি চাই, নাহিদ ইসলাম সত্য বলুক। রাজনীতিতে সত্যকে গুরুত্ব না দিলে জনআস্থা ধ্বংস হয়ে যায়। মিথ্যার উপর ভিত্তি করে কোনো নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সম্ভব নয়।”
তিনি সবাইকে আহ্বান জানান, সত্যকে সামনে রেখেই যেন রাজনৈতিক পথচলা হয়। তার ভাষায়, “সত্যের ভিতরেই রয়েছে রাজনৈতিক মুক্তির পথ। আমি আমার বক্তব্যের পক্ষে যেকোনো জায়গায় চ্যালেঞ্জ গ্রহণে প্রস্তুত। আমার প্রতিটি বক্তব্য শতভাগ সত্যের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে।”
রাশেদ খানের এই বিস্ফোরক মন্তব্য ইতোমধ্যে রাজনৈতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তরুণ নেতৃত্ব এবং বিকল্প রাজনৈতিক ধারার নেতাকর্মীদের মধ্যে বিষয়টি নতুন করে বিভক্তি ও সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে।
এই বিতর্কের পরিণতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।



















