close
  
  
         
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কে এম সফিউল্লাহ আর নেই: দেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় নাম
 
			 
				
					বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার, বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত, এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল কে এম সফিউল্লাহ ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুতে জাতি এক মহামূল্যবান নেতাকে হারালো।
জানা গেছে, সফিউল্লাহ দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন এবং তার শরীরে নানা জটিল রোগ ছিল। তার মধ্যে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, থাইরয়েডের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, এবং ডিমেনশিয়া ছিল। মৃত্যুর আগে তিনি দীর্ঘ সময় চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার ব্যক্তিগত সহকারী জিয়া রহমান মনি এই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
জনতার ভালোবাসায় ভরা শেষ বিদায়
মুক্তিযুদ্ধে গৌরবময় অবদান রাখা এই সেনানায়ককে বিদায় জানাতে সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা বাদ আসর সেনাবাহিনীর কেন্দ্রীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ, সামরিক বাহিনীর সদস্য, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, এবং সর্বস্তরের জনগণ তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হবেন।
সফিউল্লাহর অবদান: মুক্তিযুদ্ধের এক নায়ক
১৯৩৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জন্মগ্রহণকারী কে এম সফিউল্লাহ ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সারির নেতা। ১৯৭১ সালে তিনি ছিলেন জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় প্রধান। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তিনি ৩ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনটি নিয়মিত আর্মি ব্রিগেড গঠিত হলে তিনি 'এস' ফোর্সের নেতৃত্ব দেন। তার সাহসিকতা এবং নেতৃত্বের জন্য তিনি মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখেন এবং 'বীর উত্তম' খেতাব লাভ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী জীবনে সংগ্রাম
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর কে এম সফিউল্লাহ ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরপর তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন—মালয়েশিয়া, কানাডা, সুইডেন, ইংল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
১৯৭৫ সালের আগস্টে সেনাপ্রধান হিসেবে তার দায়িত্ব শেষ হয় এবং পরবর্তী সময়ে তিনি ১৯৭৬ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ১৬ বছর ধরে বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করার পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এবং নির্বাচিত হন।
অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় এই নেতা সবার হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবেন
মুক্তিযুদ্ধ, সেনাবাহিনী, এবং দেশের পরবর্তী রাজনৈতিক ইতিহাসে কে এম সফিউল্লাহ এক অবিস্মরণীয় নাম হয়ে থাকবেন। তার সাহসিকতা, নিষ্ঠা এবং নেতৃত্বের গুণাবলী বাংলাদেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছে। দেশ তার অবদানের জন্য চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকবে।
শেষ কথা
এভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামে অনবদ্য অবদান রাখা এক মহান মুক্তিযোদ্ধার প্রয়াণ জাতির জন্য এক গভীর শোকের দিন। তবে তার অবদান ও গৌরবময় জীবন চিরকাল মানুষের হৃদয়ে অমলিন থাকবে। কে এম সফিউল্লাহ যেমন মহান, তেমনি তার জীবনযাত্রাও দেশবাসীর জন্য এক মহামূল্যবান শিক্ষা হয়ে থাকবে।
					
					
					
					
					
					
    
					
					
			
					
					
					
					
					
					
					
				
				
				
				Nessun commento trovato
							 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			