close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

মৌলিক পরিবর্তনের জন্য সংসদে আসুন , আমীর খসরু

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিএনপির আমীর খসরু বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনসহ যেকোনো বড় পরিবর্তনের জন্য জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে আসতে হবে; বাইরের কেউ এই পরিবর্তন আনতে পারবে না।..

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতির মতো মৌলিক পরিবর্তনের জন্য জনগণের সরাসরি অনুমোদন নিয়ে সংসদে আসা অপরিহার্য। বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে পিআর পদ্ধতি নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “যদি সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের বিষয়ে ইচ্ছা থাকে, তা হলে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে আসতে হবে। মৌলিক পরিবর্তনের জন্য জনগণকে সঙ্গী করতে হবে এবং সংসদে সেটা পাশ করাতে হবে। এই পর্যায়ে এটি আলোচনা হওয়ার বিষয় নয়।”

এদিন বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের অংশীদার দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা জানান আমীর খসরু। বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জনঅধিকার পার্টি, আম জনতা দল ও গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যসহ অন্যান্যদের সঙ্গে যৌথ লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

তিনি আরও বলেন, “আমাদের ৩১ দফায় সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের কথা ছিল না। এত বড় পরিবর্তন শুধু আগামী সংসদ ছাড়া কেউ করতে পারবে না। আমরা যখন রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার থেকে সংসদীয় পদ্ধতিতে আসি, তখন সব দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংসদে সেই পরিবর্তন পাশ করেছিল।”

সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি অনেক বিষয়ে একমত, তবে সব বিষয়ে ঐকমত্য হবে না। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেগুলোই হবে সংস্কার। বাকিটা জনগণের কাছে গিয়ে মতামত নিয়ে করতে হবে।”

লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জেড রিয়াজউদ্দিন নসু প্রমুখ।

বৈঠকে আগামী নির্বাচন ও ৩১ দফা বাস্তবায়নের বিষয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। আমীর খসরু বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে—তার প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। লন্ডনে মিটিং হয়েছে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা হবে।”

তিনি বলেন, “দেশের স্বার্থে বিএনপি যে কোনো বিষয়ে ছাড় দিতে প্রস্তুত। আমরা বাকশাল করবো না, তবে যেখানে ঐকমত্য হবে সেখানে সংস্কার হবে।”

এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন দিক নির্দেশনার প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে পরিবর্তনের পথে সর্বজনীন ঐক্যের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে বিএনপির এই বার্তা স্পষ্ট করে দেয় যে, রাজনৈতিক পরিবর্তন হবে জনগণের সম্মতিক্রমেই এবং সংসদীয় ব্যবস্থার মধ্য দিয়েই। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন নিয়ে আলোচনা নতুন নয়, তবে এটিকে বাস্তবায়ন করার জন্য সকল দলের ঐক্য জরুরি বলে মনে করছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

একদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদার করার চেষ্টা, অন্যদিকে নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে সরব বিএনপি—এসবই দেশীয় রাজনীতিতে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। ভোটের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চালু করার দাবি দীর্ঘদিনের হলেও তা বাস্তবায়নের জন্য এখন প্রয়োজন সার্বজনীন ঐক্য এবং সংসদীয় অনুমোদন।

এই প্রেক্ষাপটে আগামী সংসদ অধিবেশন রাজনৈতিক আলোচনার মঞ্চ হতে যাচ্ছে যেখানে নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন।

বিএনপির এ দৃঢ় অবস্থান যে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সংস্কার আনার অঙ্গীকার, তা আগামী দিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে।

No comments found