ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের বিরুদ্ধে বড় সাফল্য পেয়েছে ইরান। দেশটির হামাদান প্রদেশে মোসাদের হয়ে কাজ করা ছয় গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করেছে ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী। তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ – সাইবার আক্রমণ চালানো, গুজব ছড়ানো ও দেশে অস্থিরতা তৈরির অপচেষ্টা।
বিশ্ববিখ্যাত সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে জানায়, মঙ্গলবার (২৪ জুন) এই অভিযান চালানো হয়। ইরানের রাজান, নাহাভান্দ ও হামাদান শহরে একযোগে অভিযান চালিয়ে এই ছয়জনকে আটক করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ছয়জন মোসাদের পক্ষে কাজ করছিলেন, এবং তারা দেশের ভেতরে সাইবার যোগাযোগ ও তথ্য হ্যাকিং এর মাধ্যমে ইরানকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা করছিল। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল—
-
জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা
-
দেশের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্ষুণ্ন করা
-
রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালানোইরানি গোয়েন্দা সংস্থার তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে তাদের এই পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে যায়। সরকার জানিয়েছে, তারা এসব ষড়যন্ত্র আগেভাগেই শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে এবং জড়িতদের আইনের আওতায় আনছে।
এর আগেই, ২০ জুন আরও এক বড় ধাক্কা দিয়েছিল ইরান। ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় যাদের সবার বিরুদ্ধেই মোসাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের প্রমাণ রয়েছে।
তারা ছিল—
-
সামাজিক অস্থিরতা তৈরিতে যুক্ত
-
ভুয়া সংবাদ ও গুজব ছড়িয়ে জনমনে ভীতির সৃষ্টি করছিল
-
সরকারবিরোধী প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছি
ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার এই 'ছায়াযুদ্ধ' অনেক পুরনো। বিশেষ করে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইসরাইলের আপত্তি এবং মোসাদের গোপন তৎপরতা এই সংঘাতকে দিনদিন আরও উগ্র করে তুলছে।
ইরান এর আগে বহুবার বলেছে যে, মোসাদের গুপ্তচররা দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে এবং তাদের অনেককে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পর গোটা দেশে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখন আরোও সরব, এবং যেকোনো ধরনের বিদেশি হস্তক্ষেপ ও গুপ্তচরবৃত্তি রুখে দিতে বদ্ধপরিকর।
ইরান আবারও প্রমাণ করলো যে তারা শুধু সাইবার নিরাপত্তায় নয়, আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা যুদ্ধেও শক্ত প্রতিপক্ষ। মোসাদ যতই চেষ্টা করুক, ইরান তাদের পথ আটকে দিতেই প্রস্তুত।