ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও দেশটির ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিয়ে নজিরবিহীন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলের শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বার্নিয়ে। জেরুজালেমে মোসাদ সদস্যদের এক সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ইরান যাতে কোনোভাবেই তাদের পারমাণবিক প্রকল্প পুনরায় সক্রিয় করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা ইসরাইলের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। গত জুন মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) ভয়াবহ হামলার ছয় মাস পূর্তিতে এই কঠোর বার্তা দিলেন তিনি।
বার্নিয়ে তার বক্তব্যে দাবি করেন, পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির লক্ষ্য ছাড়া অন্য কোনো কারণে ইরান উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারে না। তিনি জানান, পূর্ববর্তী সামরিক অভিযানে ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নিবিড় সহযোগিতার মাধ্যমে ইসরাইল এখন এমন এক অবস্থানে রয়েছে যেখানে ইরানের যেকোনো তৎপরতা মুহূর্তের মধ্যে নস্যাৎ করে দেওয়া সম্ভব। বার্নিয়ে আরও যোগ করেন যে, গত কয়েক মাসের ঘটনাপ্রবাহ প্রমাণ করেছে যে ইরানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত ভঙ্গুর এবং ইসরাইলি গোয়েন্দারা দেশটির ভেতরে ব্যাপকভাবে অনুপ্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে।
কূটনৈতিক সমাধানের পথে ইরান বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন মোসাদ প্রধান। তিনি বলেন, তেহরান পুনরায় একটি ‘খারাপ পারমাণবিক চুক্তি’ বাস্তবায়ন করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধোঁকা দিতে চায়। তবে ইসরাইল এমন কোনো চুক্তির পথে হাঁটবে না যা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে। বার্নিয়ের মতে, ইরান এখন পুরোপুরি উন্মুক্ত এবং ইসরাইলি গোয়েন্দাদের নজরদারির অধীনে রয়েছে, যা আয়াতুল্লাহদের শাসনব্যবস্থাকে চরম অস্থিরতার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
ইসরাইলের দাবি অনুযায়ী, ইরান কেবল শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের কথা বলে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ব্যালিস্টিক কর্মসূচি সম্প্রসারণ করছে। অন্যদিকে, ইরান গত জুনের যুদ্ধে এক হাজার নাগরিক নিহতের কথা উল্লেখ করে ইসরাইলের দিকে কয়েকশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়েছিল। এই পাল্টাপাল্টি হামলা ও উত্তেজনার মধ্যেই মোসাদ প্রধানের এই নতুন হুঁশিয়ারি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে এক নতুন ডামাডোল সৃষ্টি করেছে।



















