মিয়ানমারের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশ, ভারত, ও চীন। এ অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি কেবল দেশটির জন্য নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্যই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি
বাংলাদেশ এই বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছে। প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, যা দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশে ব্যাপক চাপ তৈরি করেছে। বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দিয়ে আসছে। তবে মিয়ানমারের সামরিক সরকারের নিষ্ক্রিয়তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
ভারতের কৌশল
ভারত, মিয়ানমারের প্রতিবেশী হিসেবে, দেশটির অস্থিতিশীলতায় সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত দেশগুলোর একটি। উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে মিয়ানমারের পরিস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে ভারত তার অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষা এবং চীনের প্রভাব মোকাবিলায় কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করেছে। তাছাড়া, ভারত চায় মিয়ানমারের সঙ্গে অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো অগ্রগামী রাখতে।
চীনের হিসাব-নিকাশ
চীন মিয়ানমারকে তার 'বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ'-এর (BRI) অংশ হিসেবে দেখে। দেশটি মিয়ানমারে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ দেশটির ওপর প্রভাব বজায় রাখতে চায়। চীন বৈঠকে মিয়ানমারের শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানালেও সামরিক সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
আঞ্চলিক রাজনীতির ভবিষ্যৎ
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশ, ভারত, ও চীনের পারস্পরিক সহযোগিতা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে, প্রতিটি দেশের নিজস্ব স্বার্থ ও কৌশল থাকায় সংকটের সমাধানে একটি ঐক্যমত্যে পৌঁছানো সহজ হবে না।
মিয়ানমার নিয়ে এই ত্রিদেশীয় আলোচনা কি সত্যিই আঞ্চলিক রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে? নাকি এটি আরও একটি ব্যর্থ উদ্যোগ হিসেবে রয়ে যাবে? সময়ই তা বলে দেবে।
Nenhum comentário encontrado