মাত্র ২৩ মিনিটেই পাকিস্তান শেষ! ভারতীয় সেনার শক্তি বিশ্বকে দেখাল 'অপারেশন সিন্দুর'—রাজনাথ সিংয়ের জোরালো হুঁশিয়ারি
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাময়িক শান্তি বিরাজ করলেও, দুই দেশের রাজনৈতিক এবং সামরিক নেতৃত্বের বক্তব্যে যেন অশান্তির আগুন জ্বলছে। এমন এক উত্তপ্ত সময়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের এক বিস্ফোরক বক্তব্য নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে।
তিনি জানান, মাত্র ২৩ মিনিটেই পাকিস্তানের ভেতরে থাকা সন্ত্রাসী ঘাঁটি সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। শুক্রবার, গুজরাটের ভুজ বিমানঘাঁটিতে সেনা প্রশিক্ষণ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বলেন, “অপারেশন সিন্দুর ছিল ভারতীয় শক্তি ও ক্ষমতার একটি ট্রেইলার। পুরো ছবি এখনও বাকি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “পাকিস্তানকে বোঝাতে খুব বেশি সময় লাগেনি আমাদের। মাত্র ২৩ মিনিটেই সব শেষ। তারা যেন জানে, ভারত এখন আর আগের মতো আমদানি করা অস্ত্রে নির্ভরশীল নয়। এখন আমরা নিজেরাই অস্ত্র বানাই—আর তা ব্যবহার করতেও জানি।”
রাজনাথ সিংয়ের দাবি, ভারতের তৈরি ব্রাহ্মস সুপারসনিক মিসাইল পাকিস্তানকে রাতের অন্ধকারে দিনের আলো দেখিয়ে দিয়েছে। তাঁর ভাষায়, “এটাই ভারতীয় প্রযুক্তির উজ্জ্বল প্রমাণ।”
IMF-এর ঋণ নিয়েও কড়া প্রশ্ন
শুধু সামরিক শক্তির কথা নয়, পাকিস্তানের অর্থনীতি নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) সম্প্রতি পাকিস্তানকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ মঞ্জুর করেছে। এ নিয়ে রাজনাথ সিং প্রশ্ন তোলেন—“এই টাকা কি সন্ত্রাসবাদে ব্যবহার হবে না?” তাঁর আশঙ্কা, এই অর্থ পাকিস্তান হয়তো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর সহায়তায় খরচ করতে পারে। তাই এই ঋণ পুনর্বিবেচনার দাবি তোলেন তিনি।
পাকিস্তানের পাল্টা হুঁশিয়ারি
এদিকে, ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে পাকিস্তানের তরফে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান এক বিবৃতিতে জানান, “ভারতের উচিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলা। যদি আগ্রাসন চালানো হয়, তাহলে জবাব দিতে আমরা বাধ্য হবো।”
তিনি সতর্ক করে আরও বলেন, “পাকিস্তান শান্তিপ্রিয়, তবে জাতীয় নিরাপত্তা প্রশ্নে আমরা কখনোই পিছিয়ে থাকবো না।”
সীমান্তে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ
যুদ্ধ না থাকলেও সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে উত্তেজনার বাতাবরণ স্পষ্ট। কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, “যুদ্ধ কখনোই সমস্যার সমাধান নয়। এতে শুধু সাধারণ মানুষের প্রাণ যায়।”
তারা উভয় দেশের সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন শান্তির পথে চলা হয় এবং সীমান্তে বসবাসকারী নিরীহ মানুষদের জীবন যেন বিপন্ন না হয়।
অতীতের সংঘাত এবং বর্তমান বাস্তবতা
উল্লেখ্য, ভারত ও পাকিস্তান এর আগে তিনটি বড় যুদ্ধে জড়িয়েছে—১৯৪৭, ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালে। এছাড়াও একাধিক সীমান্ত উত্তেজনা, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের মাধ্যমে দুই দেশ একে অপরের প্রতি শক্তি প্রদর্শন করেছে।
সর্বশেষ ২২ এপ্রিল, ভারতশাসিত কাশ্মীরে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। নয়াদিল্লি এ হামলার জন্য সরাসরি ইসলামাবাদকে দায়ী করে, যদিও পাকিস্তান সরকার এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে এমন উত্তেজনামূলক মন্তব্য ও পাল্টা হুমকি গোটা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য উদ্বেগজনক।
শেষ কথা
রাজনাথ সিংয়ের '২৩ মিনিটে পাকিস্তান শেষ' মন্তব্য নিছক রাজনৈতিক বক্তব্য, নাকি এর পেছনে বাস্তব সামরিক অভিযানের বার্তা—তা সময়ই বলবে। তবে এতটুকু নিশ্চিত, ভারত এখন আর চুপ করে সন্ত্রাস মেনে নিতে রাজি নয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে—পাকিস্তান কি আসলেই ভারতের শক্তির ‘পুরো ছবি’ দেখার জন্য প্রস্তুত? নাকি কূটনৈতিক আলোচনায় আবারো ফিরে আসবে শান্তির পথ?



















