পাকিস্তানকে উদ্দেশ করে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করলেন বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার। কাশ্মীরের পেহেলগামের ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন এই জনপ্রিয় অভিনেতা। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া তাঁর নতুন দেশাত্মবোধক সিনেমা ‘কেসরী চ্যাপ্টার ২’-এর এক বিশেষ প্রদর্শনীতে বক্তব্য রাখার সময়ই ঘটে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা।
শনিবার ভারতের এক প্রেক্ষাগৃহে হঠাৎ করেই উপস্থিত হন অক্ষয় কুমার। চলছিল ‘কেসরী চ্যাপ্টার ২’-এর স্ক্রিনিং। সিনেমা শেষ হওয়ার পরে দর্শকদের সঙ্গে কথা বলতে ওঠেন তিনি। সিনেমার গল্প, দেশপ্রেম এবং সাহসিকতা নিয়ে কথা বলতে গিয়েই উঠে আসে সাম্প্রতিক পেহেলগামের ঘটনা। সেখানে জঙ্গিদের হামলায় নিহত হন নিরীহ পর্যটকেরা।
অক্ষয় মাইক হাতে বলেন, “আজ আবার আমাদের মনে ক্ষোভ, হতাশা আর যন্ত্রণার আগুন জ্বলে উঠেছে। আপনারা বুঝতেই পারছেন, আমি কার কথা বলছি।” এরপর নিজের সিনেমার একটি বিখ্যাত সংলাপের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “এই জঙ্গিদের উদ্দেশে আমি একটা কথাই বলতে চাই, যা আমি এই ছবিতেও বলেছি।”
এই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই অক্ষয় মঞ্চ থেকে দর্শকদের দিকে মাইক এগিয়ে দেন। সমবেত দর্শকরা গর্জে ওঠেন, “পাকিস্তান তোমাকে...!”—এরপরই প্রেক্ষাগৃহে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা।
ভিডিওটি মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। অক্ষয়ের এই মন্তব্য এবং দর্শকদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। কেউ বলছেন, এটা একান্তই একজন দেশপ্রেমিক নাগরিকের আবেগপ্রবণ প্রতিক্রিয়া, আবার কেউ বলছেন—জনসমক্ষে এমন ভাষা ব্যবহার করা একজন তারকার কাছে অনুচিত।
অক্ষয় পরে নিজের সোশ্যাল মিডিয়াতে লিখেছেন,
“পেহেলগামের জঙ্গি হামলার ঘটনা জেনে আমি স্তম্ভিত। কীভাবে এতটা নির্মম হতে পারে কেউ? নিরীহ পর্যটকদের প্রাণহানি সত্যিই বেদনাদায়ক। নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”
এই বক্তব্যে বোঝা যায়, শুধু একজন অভিনেতা নয়, একজন সাধারণ ভারতীয় নাগরিক হিসেবেও অক্ষয় এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন।
এইদিনের প্রদর্শনীতে অক্ষয়ের সঙ্গে ছিলেন আর মাধবন, যিনি ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ছবিতে আরও আছেন অনন্যা পাণ্ডে, আর পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন কর্ণ সিংহ ত্যাগী।
‘কেসরী চ্যাপ্টার ২’ মূলত ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহসিকতা এবং আত্মত্যাগের কাহিনি নিয়ে নির্মিত। ছবির প্রতিটি মুহূর্ত দর্শকদের দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করছে। আর এই পারদ চরমে পৌঁছেছে যখন পর্দার বাইরে এসে অক্ষয় নিজেই প্রতিবাদে মুখর হলেন।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, বলিউড আজ শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং সমাজে চলমান সংকট, সহিংসতা ও নৈতিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদেরও ভাষা হয়ে উঠছে। অক্ষয় কুমারের কণ্ঠে উঠে এসেছে সেই নির্ভীক প্রতিবাদের সুর—যা দেশবাসীর মন ছুঁয়ে গেছে, আবার বিতর্কও সৃষ্টি করেছে।