ফুটবল বিশ্বে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। লিভারপুল ও পর্তুগালের জাতীয় দলের উদীয়মান তারকা ফুটবলার দিয়োগো জোতা আর নেই। মাত্র ২৭ বছর বয়সে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। স্পেনের একটি স্থানীয় সংবাদ সংস্থার বরাতে স্কাই নিউজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বলা হচ্ছে, স্পেনে একটি পারিবারিক ভ্রমণের সময় এই দুর্ঘটনার শিকার হন জোতা। একটি দ্রুতগামী গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। গাড়িতে তখন তার পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যও ছিলেন বলে জানা গেছে, যাদের মধ্যে একজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
দিয়োগো জোতা লিভারপুলের হয়ে নিয়মিত প্রথম একাদশে খেলে এসেছেন। তার গতিময় খেলা, নিখুঁত গোল করার ক্ষমতা এবং ট্যাকটিক্যাল বুদ্ধিমত্তা তাকে খুব অল্প সময়েই ফুটবলপ্রেমীদের প্রিয় করে তোলে। জাতীয় দলের হয়েও জোতা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অসাধারণ পারফর্মেন্স উপহার দিয়েছেন। ইউরো ও বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে পর্তুগালের জার্সিতে তার অবদান অনস্বীকার্য।
লিভারপুল ফুটবল ক্লাব এক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করে জানিয়েছে, “আমরা আমাদের পরিবারের একজনকে হারালাম। জোতা শুধু একজন খেলোয়াড় ছিলেন না, তিনি ছিলেন আমাদের আত্মার অংশ।” দলের খেলোয়াড়, কোচ, এবং ভক্তরা এই অকাল মৃত্যুতে শোকাহত।
পর্তুগালের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো দা সুজা এক শোকবার্তায় বলেন, “এই ক্ষতি কেবল পর্তুগালের নয়, গোটা ফুটবল বিশ্বের। জোতার প্রাণবন্ততা ও প্রতিভা আমাদের হৃদয়ে চিরকাল স্মরণীয় থাকবে।”
দিয়োগো জোতা ২০১৮ সালে উলভস থেকে লিভারপুলে যোগ দেন। এরপর থেকে তিনি দলের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেন। ক্লাব ক্যারিয়ারে তার অসংখ্য স্মরণীয় গোল রয়েছে। সম্প্রতি চ্যাম্পিয়নস লিগেও তার অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য তিনি প্রশংসিত হন।
তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকের জোয়ার নামে। ফুটবল ভক্ত, সাবেক খেলোয়াড় এবং বর্তমান তারকারা সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের শোকবার্তা প্রকাশ করেন। ম্যানচেস্টার সিটির আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড জুলিয়ান আলভারেজ টুইট করে লেখেন, “বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। এমন একজন প্রতিভাবান মানুষ এত তাড়াতাড়ি চলে গেলেন!”
লিভারপুল ক্লাব ইতিমধ্যেই ৭ দিনের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে এবং পরবর্তী ম্যাচগুলোতে কালো বাহুবন্ধনী পড়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনুরাগীদের জন্য এক ‘ট্রিবিউট গ্যালারি’ স্থাপন করা হয়েছে অ্যানফিল্ডে, যেখানে হাজার হাজার সমর্থক ফুল, চিঠি ও ছবি রেখে তাদের ভালোবাসা জানাচ্ছেন।
এই দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে স্পেনের ট্রাফিক বিভাগ। সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ সংগ্রহ করে তারা ঘটনার বিস্তারিত ব্যাখ্যার চেষ্টা করছে।
ফুটবল দুনিয়ায় এমন অকাল মৃত্যু খুবই বিরল। দিয়োগো জোতা ছিলেন সেই গুটিকয়েক খেলোয়াড়ের একজন যিনি মাঠে যেমন প্রাণবন্ত ছিলেন, মাঠের বাইরেও তেমনি বিনয়ী, মানবিক ও সাহচর্যপূর্ণ এক মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
তার এই অনাকাঙ্ক্ষিত বিদায়ে যে শূন্যতা তৈরি হলো, তা সহজে পূরণ হবার নয়।
ফুটবল বিশ্ব এক অপূরণীয় ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। দিয়োগো জোতার মৃত্যু শুধু একজন খেলোয়াড়ের না, এক সম্ভাবনার বিদায় — যে হয়তো ভবিষ্যতে বিশ্বসেরা হতেন। ভক্তদের হৃদয়ে তিনি চিরদিন অম্লান থাকবেন।
 'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  'আই নিউজ বিডি' অ্যাপ
  
  
 
		 
				 
			



















 
					     
			 
						 
			 
			 
			 
			 
			 
			