লাদেনের গোপন প্রেম: বলিউডের সুরের জগতে এক আতঙ্কের নাম!
ওসামা বিন লাদেন—এক সময় যার নাম শুনলেই বিশ্বজুড়ে শিহরণ জাগত, সেই তিনিই কি না ছিলেন বলিউড গায়িকা অলকা ইয়াগনিকের বিরাট ভক্ত! অবিশ্বাস্য শোনালেও, এটাই সত্যি!
২০১১ সালের মে মাসে পাকিস্তানের এবোটাবাদে লাদেনের গোপন আস্তানায় হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী। এই অভিযানে সিআইএ (CIA) তার ব্যবহৃত কম্পিউটার, হার্ডড্রাইভ ও ডকুমেন্টস জব্দ করে। এরপর তদন্তকারীরা যা খুঁজে পান, তাতে তারা বিস্মিত! ওসামার কম্পিউটারে পাওয়া যায় বলিউডের জনপ্রিয় প্লেলিস্ট!
তালিকায় ছিল সেই সময়ের জনপ্রিয় শিল্পীরা—উদিত নারায়ণ, কুমার শানু, এবং বিশেষভাবে অলকা ইয়াগনিকের অসংখ্য গান! বিশেষ করে তার গাওয়া ‘আজনাবি মুঝকো ইতনা বাতা’, ‘দিল তেরা আশিক’, ‘তু চাঁদ হ্যায় পুনাম কা’—এই গানগুলো লাদেনের সংগ্রহে ছিল।
অলকার প্রতিক্রিয়া: ‘এতে কী আমার দোষ?’
বছরের পর বছর লাদেনের কর্মকাণ্ড ও নিষ্ঠুরতার কথা শোনার পর, তার এই সংগীতপ্রীতি অনেকের কাছেই অদ্ভুত ঠেকেছে। যখন এই তথ্য সামনে আসে, তখন বিষয়টি অলকা ইয়াগনিকের কাছেও ছিল এক বড় বিস্ময়!
এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক আনু রঞ্জনের সঙ্গে কথোপকথনের সময় গায়িকা বলেন,
"এতে কী আমার দোষ?"
তিনি আরও বলেন, "ওসামা বিন লাদেন যেমনই হোক, তার মধ্যে একটা ছোট্ট শিল্পী তো ছিলই! যদি আমার গান পছন্দ করে থাকে, তাহলে সেটা তো ভালোই, তাই না?"
কীভাবে বলিউডের গান পৌঁছাল লাদেনের কাছে?
প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে লাদেনের মতো একজন কট্টর জঙ্গি নেতার কাছে বলিউডের গান পৌঁছাল? ধারণা করা হয়, লাদেন তার সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি ও মিডিয়া সম্পর্কে জানতে চাইতেন। তার অনুসারীরা হয়তো তার বিনোদনের জন্য এসব গান সংগ্রহ করেছিল।
এবোটাবাদের সেই বাড়ি থেকে পাওয়া কম্পিউটারে আরও অনেক অদ্ভুত তথ্য ছিল। শুধুমাত্র গান নয়, বিভিন্ন চলচ্চিত্র ও বিনোদনমূলক ভিডিওও তার কাছে ছিল বলে জানা যায়।
লাদেনের শেষ সময়: মার্কিন বাহিনীর অভিযান
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলার মূল পরিকল্পনাকারী লাদেনকে ধরতে মার্কিন বাহিনী প্রায় এক দশক ধরে চেষ্টা চালায়। অবশেষে ২০১১ সালের ১ মে, মার্কিন নেভি সিলের বিশেষ কমান্ডো বাহিনী পাকিস্তানের এবোটাবাদে এক ঝটিকা অভিযানে তাকে হত্যা করে।
তার সংগঠন আল-কায়েদা ছিল বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর জঙ্গি দলগুলোর একটি, যার নেতৃত্বে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে। কিন্তু এতসব কঠোর বাস্তবতার মাঝেও তার প্লেলিস্টে ছিল বলিউডের প্রেমের গান!
শেষ কথা
ওসামা বিন লাদেনের বলিউডপ্রেম নিঃসন্দেহে বিস্ময়ের বিষয়। একদিকে ছিল তার রক্তচক্ষু নেতৃত্ব, অন্যদিকে ছিল নরম সুরের প্রতি আকর্ষণ! অলকা ইয়াগনিক নিজেও বিস্মিত, তবে তিনি মনে করেন, সঙ্গীতের শক্তি এমনই যে, এটি সব সীমারেখা পেরিয়ে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয়!