close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

কুতুবদিয়া চ্যানেল সাঁতরে পাড়ি দিলেন ১৫ সাঁতারু

Nazrul Islam avatar   
Nazrul Islam
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুতুবদিয়া:

বাংলাদেশের তরুণ সাঁতারুরা গড়ে তুললেন আরেকটি সাহসিকতার নজির। বঙ্গোপসাগরের খরস্রোতা কুতুবদিয়া চ্যানেল সাঁতরে পাড়ি দিয়েছেন দেশের ১৫ জন কৃতি সাঁতারু। শনিবার (১২ এপ্রিল) ইতিহাস গড়ার এই অভিযানে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দক্ষ সাঁতারুরা।
বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে কক্সবাজারের পেকুয়ার মগনামা জেটিঘাটের উত্তর পাশে নদীর চরে দাঁড়িয়ে সাঁতার শুরু করেন তাঁরা। সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ কুতুবদিয়া চ্যানেল পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে—কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ জেটিঘাটে পৌঁছান তাঁরা। মাত্র ১ ঘণ্টা ২৫ মিনিটে প্রথম সাঁতারু হিসেবে তীরে পৌঁছান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম ওরফে রাসেল।
এই অভিযানের মূল উদ্যোক্তা ও আয়োজক ছিল স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ওপেন ওয়াটার সুইমিং। প্রতিষ্ঠানটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ১৫ জন দক্ষ সাঁতারু নির্বাচন করে এই চ্যালেঞ্জিং চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। অভিযানকালে অংশগ্রহণকারী সাঁতারুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চ্যানেলে তৈরি করা হয় সুরক্ষাবলয়। ৭টি নৌযান সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে নিয়োজিত ছিল, সঙ্গে ছিলেন গণমাধ্যমকর্মী, দমকল বাহিনীর প্রতিনিধিরাও।
এ অভিযানে অংশ নেন:
চাঁদপুরের মো. মাহমুদুল হাসান, বগুড়ার জাহেদুল ইসলাম জাহিদ, রাজশাহীর এস. এম. শাহরিয়ার মাহমুদ, ঢাকার শাহনেওয়াজ বাবু, হবিগঞ্জের আলী রওনক সৌরভ, পাবনার জামিল হাসান, ঢাকার শহিদুল্লাহ প্রান্তিক, নেত্রকোনার হাবিবুর রহমান, শরীয়তপুরের জিহাদ হোসাইন, বরিশালের মো. শরিফ ফয়সাল, ঢাকার নাসির আহমেদ সৌরভ, দিনাজপুরের শাখাওয়াত হোসাইন সাকিব ও চট্টগ্রামের মো. ফয়সাল জিয়া।
তৃতীয় সাঁতারু হিসেবে সফলভাবে কুতুবদিয়ার মাটি স্পর্শ করেন আবদুল মতিন। প্রত্যেক সাঁতারুই তাদের সাহস, আত্মবিশ্বাস এবং শারীরিক সক্ষমতার মাধ্যমে এই অভিযানকে স্মরণীয় করে তোলেন।
প্রথম হয়ে চ্যানেল পাড়ি দেওয়া সাইফুল ইসলাম বলেন,"কুতুবদিয়া চ্যানেল এবারই প্রথম পাড়ি দিলাম। আমি এর আগে সাতবার বাংলা চ্যানেল সাঁতরে পাড়ি দিয়েছি, দু’বার প্রথম হয়েছি। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এখানে বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগ বারবার ঘটে। অনেক প্রাণহানি ঘটে শুধু সাঁতার না জানার কারণে। আমরা এই অভিযানের মাধ্যমে বলতে চাই—কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। সাধনা আর মনোবল থাকলে সব জয় করা সম্ভব।”
এই সাঁতারুদের লক্ষ্য শুধু দুঃসাহসিকতা দেখানো নয়, বরং জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা। দেশে সাঁতারের গুরুত্ব, পানিতে নিরাপত্তা, দুর্যোগ মোকাবেলায় আত্মরক্ষার কৌশল সম্পর্কে বার্তা দিতেই তারা এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করছেন। আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ ওপেন ওয়াটার সুইমিং-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভবিষ্যতে তারা দেশের নদ-নদী ও সমুদ্রকে ঘিরে আরও বড় মাপের সাঁতার অভিযান আয়োজন করবে, যাতে দেশীয় প্রতিভা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও জায়গা করে নিতে পারে।

Nema komentara