সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোড়ন তুলে দিয়েছেন চিত্রনায়িকা ও অভিনেত্রী সামিরা খান মাহি। সম্প্রতি তার একটি নাচের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে ইতোমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নানা রকম বিতর্ক। ভিডিওতে সাহসী পোশাক ও পারফরম্যান্সের কারণে মাহিকে অনেকেই কঠোর ভাষায় সমালোচনা করছেন। কেউ বলছেন এটি ‘দৃষ্টিকটূ’, কেউ বলছেন ‘ফ্যাশন ডিজাস্টার’। তবে মাহির দাবি, সবকিছুই ভুল ব্যাখ্যার ফল এবং ভিডিওটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভাইরাল ভিডিও ও নেটদুনিয়ার প্রতিক্রিয়া
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরপরই, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা। নেটিজেনদের একাংশ লিখেছেন—“ড্রেসটা এতটাই টাইট, মনে হচ্ছে নিশ্বাস নিলেই ফেটে যাবে!” অনেকে একে ‘লাইভ ফ্যাশন ডিজাস্টার’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। কিন্তু মাহি এসব সমালোচনার জবাব দিতে একটুও দেরি করেননি।
তিনি বলেন, “অনেকে ভাবছে আমি কিছুই পরিনি! কিন্তু বাস্তবে আমি কস্টিউমের নিচে আরও দুইটা জামা পরেছিলাম!” এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে আবারও নতুন করে হাস্যরসের সৃষ্টি করে। একজন ব্যবহারকারী তো সরাসরি লিখেছেন, “যদি এটা দুইটা জামা পরে হয়, তাহলে একটাও না পরলে কী হতো?”
‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ বলছেন মাহি
ভিডিওটি কারা প্রকাশ করেছে, সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মাহি। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ভিডিওটি ইচ্ছাকৃতভাবে ‘জুম’ করে এবং খণ্ডিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে, যেন তাকে বিতর্কিত করা যায়। মাহি বলেন, “আমি ইভেন্টে অংশ নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা পারফর্ম করেছি। সেখানে নানা ধরনের নাচের মুদ্রা ছিল। কিন্তু তার মধ্যে থেকে এক মিনিটের একটি অংশ কেটে, সেটি জুম করে পাবলিশ করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এটা একদমই ঠিক হয়নি। কেউ আমাকে হেয় করতেই এমন কাজ করেছে।”
কস্টিউম বিতর্ক ও প্রস্তুতির অভাব
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা কস্টিউম নিয়েও মুখ খুলেছেন মাহি। তিনি জানান, পারফর্ম করার মাত্র একদিন আগে কস্টিউমটি হাতে পান। কোনো রকম পরিবর্তনের সময়ও ছিল না। এছাড়া, তার নিজস্ব কোনো কস্টিউম ডিজাইনার বা মেকআপ আর্টিস্ট নেই। যার ফলে অনেক সময় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মানসম্মত প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয় না।
“কস্টিউমটা বডি ফিটিং হওয়ায় এমনটা মনে হতে পারে। কিন্তু আমি নিশ্চিত করছি, এর নিচে আমি যথেষ্ট কভারেজ রেখেছিলাম,” বলছিলেন মাহি।
‘পাবলিসিটি স্টান্ট’ নাকি ‘শিল্পীর প্রতি অন্যায়’?
অনেকেই বিষয়টিকে দেখছেন সম্পূর্ণ ভিন্ন চোখে। কারও মতে এটি ছিল ‘পাবলিসিটি স্টান্ট’, যার লক্ষ্য ছিল ভাইরাল হওয়া এবং আলোচনায় আসা। এক নেটিজেন লিখেছেন, “আগে যারা নাচতো তারা ছিল ‘নৃত্যশিল্পী’, এখন যারা নাচে তারা হয় ‘ট্রেন্ডিং টপিক’!”
তবে মাহির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে কেউ কেউ বলছেন, “একজন শিল্পীকে তার পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে নয়, বরং পোশাকের কারণে বিচার করা হচ্ছে—এটা ঠিক নয়।” কেউ কেউ মনে করছেন, শিল্পীর সৃজনশীলতা ও পারফরম্যান্সের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে।
আলোচনার কেন্দ্রে মাহি
সব মিলিয়ে একটাই সত্য—এই ভিডিও, বিতর্ক, ও মাহির ব্যাখ্যা তাকে আবারও ফিরিয়ে এনেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। হয়তো সমালোচনা আছে, কিন্তু সেই সমালোচনাই এখন মাহিকে মিডিয়া ট্রেন্ডের শীর্ষে নিয়ে এসেছে।
সমালোচনার মাঝেও মাহি আপাতত নির্ভার। তার ভাষ্য, “আমি জানি আমি কী করছি। যারা ভালো বোঝেন, তারা সত্যটা ঠিকই বুঝে নেবেন।