close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

করোনা-আশঙ্কার মাঝেই ছুটি শেষে খুলল স্কুল

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঈদ ও গ্রীষ্মের ছুটি শেষে খুলেছে স্কুল। তবে করোনা সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কায় স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। আপাতত স্কুল বন্ধের আশঙ্কা নেই, তবে সতর্কতা সর্বোচ্চ।..

ঈদের ছুটি আর গ্রীষ্মের বিশ্রামের পর আজ রবিবার থেকে ফের জমে উঠছে স্কুলের শ্রেণিকক্ষ। তবে ছুটির আমেজের রেশ কাটার আগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সময় সামনে এসেছে এক নতুন উদ্বেগ—করোনাভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাব্য নতুন ঢেউ।

আজ (রবিবার) থেকে দেশের সকল নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লাস শুরু হয়েছে। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো চালু হবে আগামী মঙ্গলবার। এরই মধ্যে মাদ্রাসাগুলো গত ১৭ জুন থেকেই ক্লাস শুরু করেছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সম্প্রতি দেশের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে করোনার সংক্রমণ আবারও বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানার নির্দেশ দিয়েছে।

মাউশির মাধ্যমিক উইংয়ের পরিচালক অধ্যাপক খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল জানান, “বর্তমানে দেশের করোনা সংক্রমণের হার খুব বেশি নয়, তাই স্কুল থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা এখনই নেই। তবে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বলা হয়েছে। বিশেষ করে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও ক্লাসরুমে স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বজায় রাখা—এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কর্তৃপক্ষ।”

তিনি আরও বলেন, “যদি সংক্রমণের হার নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়, তখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরামর্শ অনুযায়ী সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু এখনই এমন পরিস্থিতি নেই।”

সরকারি-বেসরকারি কলেজে ঈদুল আজহার ছুটি ছিল তুলনামূলকভাবে কম—৩ জুন থেকে শুরু হয়ে ১২ জুন পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটি বাদ দিলে মোট ছুটি ছিল মাত্র আট দিন।
অন্যদিকে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ঈদুল আজহা এবং গ্রীষ্মকালীন ছুটি কিছুটা দীর্ঘ ছিল। এই বিদ্যালয়গুলো ৩ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত বন্ধ ছিল।

একই সময় মাদ্রাসাগুলোতে (ইবতেদায়ী, দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল) ৩ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত ১৪ দিন ছুটি ছিল। এছাড়া, এইচএসসি ভোকেশনাল, বিএম ও বিএমটি পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলো ৩ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ছুটিতে ছিল।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেওয়া নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে মানা হচ্ছে কি না, তা যাচাই করার কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সারাদেশের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে জানা যাবে বাস্তব চিত্র।

কর্তৃপক্ষের ভাষ্য মতে, যদিও করোনা সংক্রমণ এখনো আতঙ্কের পর্যায়ে পৌঁছায়নি, তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। কারণ শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা অধিকতর সংবেদনশীল এবং তারা নিজেদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় শিথিলতা দেখাতে পারে, যদি না স্কুল কর্তৃপক্ষ তা নিশ্চিত করে।

বর্তমানে সরকার শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে আগ্রহী, তবে কোনোভাবেই স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে নয়। কর্তৃপক্ষ মনে করছে, আগেভাগেই সচেতনতা বাড়ানো গেলে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের পরিস্থিতি ভারতের মতো হলে স্কুল আবার বন্ধ করার প্রয়োজন হতে পারে, তবে এখনই সেই অবস্থা আসেনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেছে।

ছুটি শেষে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরেছে, বই-খাতা আর বন্ধুদের সঙ্গে আবারও মুখর হচ্ছে স্কুল ক্যাম্পাস। তবে আনন্দের এই প্রত্যাবর্তনে লুকিয়ে আছে কিছু সতর্কবার্তা। সরকার শিক্ষা অব্যাহত রাখতে চায়, তবে কোনোভাবেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে নয়।
এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সচেতনতা ও দায়িত্বশীলতার মধ্যেই নির্ভর করছে—শিক্ষা চালু থাকবে, নাকি আবার থমকে যাবে শ্রেণিকক্ষ।

Nessun commento trovato