পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার নিউটাউন সংলগ্ন ইকো পার্কের অদূরে অবস্থিত ‘বাংলাদেশি কলোনি’ বা ঘুনি বস্তিতে গত বুধবার সন্ধ্যায় এক বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুনের ভয়াবহতায় মুহূর্তের মধ্যে একের পর এক ঝুপড়ি ভস্মীভূত হয়ে যায়। তবে এই অগ্নিকাণ্ডকে কেবল একটি সাধারণ দুর্ঘটনা হিসেবে দেখতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে বিজেপি নেতা অমিত মালব্য এই ঘটনার নেপথ্যে পশ্চিমবঙ্গ শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের (টিএমসি) এক গভীর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন।
অমিত মালব্যর দাবি অনুযায়ী, ভারতের নির্বাচন কমিশন যখন অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে, ঠিক তার কয়েক দিন আগেই এই অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। তার অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেস পরিকল্পিতভাবে এই আগুন লাগিয়েছে যাতে বস্তিবাসী বাংলাদেশিরা দাবি করতে পারে যে তাদের আধার কার্ড, রেশন কার্ড এবং ভোটার আইডি কার্ড আগুনে পুড়ে গেছে। এর ফলে প্রশাসনিকভাবে তাদের নতুন করে নাগরিকত্বের নথি বা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পথ সহজ হবে। তিনি এই ঘটনাকে ‘ইচ্ছাকৃত জালিয়াতি’ এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘আগুন নিয়ে খেলছেন’ বলে কটাক্ষ করেন।
স্থানীয় সূত্র এবং সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই এই কলোনির অনেক বাসিন্দা তাদের ঘরে তালা দিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে গেছেন। অনেক ঘর দীর্ঘ সময় ধরে পরিত্যক্ত ছিল। অভিযোগ উঠেছে, ফেলে যাওয়া সেই সব ঘরের পুরনো প্রমাণ লোপাট করতেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। অগ্নিকাণ্ডের সময় দমকল বাহিনীর দেরিতে পৌঁছানো নিয়েও ক্ষুব্ধ স্থানীয়দের একটি অংশ। সব মিলিয়ে অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনাটি এখন নিছক দুর্ঘটনা ছাপিয়ে এক বড় রাজনৈতিক বিতর্কের রূপ নিয়েছে।



















