close
ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!
কিংবদন্তি তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন আর নেই: সংগীত জগতে এক অপূরণীয় শূন্যতা


ভারতের ক্লাসিক্যাল সংগীতের শীর্ষস্থানীয় ও কিংবদন্তি তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেন আর আমাদের মধ্যে নেই। ৭৩ বছর বয়সী এই মহারথী রোববার যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালে, নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। শেষ এক সপ্তাহ ধরে তিনি হৃদরোগজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার মৃত্যুবার্ষিকীটি নিশ্চিত করেছেন তার বন্ধু এবং বিশিষ্ট বাঁশিবাদক রাকেশ চৌরাসিয়া।
এমন এক মহাপুরুষের চলে যাওয়ার খবরটি ভারতের জনগণ এবং বিশ্ব সংগীতপ্রেমীদের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি শুধু তবলা বাজিয়েই নয়, বিশ্বের একাধিক সংগীতশিল্পীর সঙ্গে কাজ করে গেছেন, যা তাকে অমর করে রাখবে। রাজস্থানের মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোরও তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
শৈশব থেকে শ্রেষ্ঠত্বের পথে
১৯৫১ সালের ৯ মার্চ ভারতের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন জাকির হোসেন। তার বাবা, ওস্তাদ আল্লারাখা খান, ছিলেন একজন বিশ্বখ্যাত তবলাবাদক। বাবা থেকেই তবলায় হাতেখড়ি হলেও শৈশব থেকেই তার তবলাবাজির প্রতি আগ্রহ ছিল আকাশচুম্বী। তার কড়া পরিশ্রম, সাধনা এবং শ্রেষ্ঠত্বের জন্য তাকে একাধিক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ তবলাবাদক
জাকির হোসেন ভারতীয় সংগীতের এক অমূল্য রত্ন। তিনি একাধারে পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণের মতো ভারতের শীর্ষস্থানীয় সম্মানে ভূষিত হন। ১৯৯৯ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান লাভ করেন এবং তিনবার গ্রামি পুরস্কারও পেয়েছেন। তার এ অর্জন বিশ্বসংগীতের ইতিহাসে এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসিক্যাল সংগীতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন
১৯ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। ১৯৭০ সালে তিনি ভারতীয় সংগীতের বিশ্বখ্যাত পণ্ডিত রবিশঙ্করের সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের মঞ্চে পারফর্ম করেন। নিউইয়র্কে অবস্থানকালে ইংলিশ গিটারিস্ট জন ম্যাকলাফলিনের সঙ্গে গঠন করেন ব্যান্ড দল ‘শক্তি’। এই দলের মাধ্যমে ভারতীয় এবং পাশ্চাত্য সংগীতের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটান জাকির হোসেন।
বিশ্ব সংগীতের কিংবদন্তি
জাকির হোসেন শুধুমাত্র ভারতীয় সংগীতের একজন পুরোধা ছিলেন না, বরং বিশ্ব সংগীতের নানা শাখায় তার অবদান ছিল অমূল্য। তিনি প্রখ্যাত আইরিশ গায়ক ভ্যান মরিসন, ব্রিটিশ মিউজিক গ্রুপ ‘লন্ডন স্ট্রিং কোয়ার্টলেট’-সহ অনেক বিখ্যাত সংগীত শিল্পীর সঙ্গে একযোগে কাজ করেছেন।
তার মৃত্যুর মাধ্যমে সংগীত জগতে এক বিশাল শূন্যতা সৃষ্টি হলো, যা কখনও পূর্ণ হবে না। তবে তার অনন্য অবদান এবং অমর সংগীত legacy আমাদের মনে চিরকাল অমলিন থাকবে।
לא נמצאו הערות