রাজনৈতিক অঙ্গনে নানান গুঞ্জনের মাঝে নতুন মাত্রা যোগ করেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎ। ২০ মে (মঙ্গলবার) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় এক ব্যতিক্রমী বৈঠকে মিলিত হন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।
বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই বৈঠকটি ছিল অত্যন্ত আন্তরিক ও গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্রদূতের প্রবাসে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়।
সূত্র জানায়, রাষ্ট্রদূত আনসারী তাঁর সাম্প্রতিক কূটনৈতিক কার্যক্রম, মেক্সিকোসহ অন্যান্য ল্যাটিন আমেরিকান দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানা ইস্যু তুলে ধরেন। একইসাথে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং তাঁর সুস্থতা কামনা করেন।
বৈঠকে দেশের রাজনীতি নিয়ে গভীর আলোচনা হয় বলেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। বর্তমান সরকারবিরোধী আন্দোলন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিএনপির অবস্থান নিয়েও মতবিনিময় হয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৈঠক বিএনপির কূটনৈতিক তৎপরতার একটি বড় ধাপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
উল্লেখ্য, মুশফিকুল ফজল আনসারী একসময় বিএনপির ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং গণমাধ্যম ও কূটনৈতিক মহলে তাঁর পরিচিতি দীর্ঘদিনের। তিনি বর্তমানে মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর হঠাৎ ঢাকায় আগমন এবং সরাসরি খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
বৈঠকের আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি না এলেও বিএনপির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, এই বৈঠক শুধুই সৌজন্যমূলক নয়, বরং এতে কিছু তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা আদান-প্রদান হয়েছে। এমনকি বৈঠকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গি ও কূটনৈতিক ভূমিকার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সাক্ষাৎ ভবিষ্যতের রাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির কৌশল, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও সমর্থন আদায়ের প্রচেষ্টায় এ ধরনের বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
শেষ পর্যন্ত এই সাক্ষাৎ রাজনৈতিক সৌজন্যতার অংশ নাকি কূটনৈতিক কোন বার্তার বাহক, সেটি সময়ই বলে দেবে। তবে রাজধানীর গুলশানে ‘ফিরোজা’য় এ ধরনের উচ্চপর্যায়ের বৈঠক একরকম রাজনৈতিক উত্তাপ তৈরি করেছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।