জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন যে, যদি কারো কাছ থেকে অবৈধভাবে এক টাকা নেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। শনিবার রাতে ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি এই চ্যালেঞ্জটি দেন এবং এর মাধ্যমে নিজের নির্দোষিতা প্রমাণ করতে চেয়েছেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ ওই পোস্টে দৈনিক প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনের সমালোচনা করেন, যেখানে তার বিলাসী জীবনযাপন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। হাসনাত দাবি করেন, "প্রথম আলোর সেই সাংবাদিককে অনুরোধ করছি— আপনি দয়া করে আমার বাসায় এসে দেখে যান, আমি কত বিলাসী জীবনযাপন করি।" তিনি প্রতিবেদনটিকে তথ্য সন্ত্রাস আখ্যা দিয়ে বলেন, "আমি নিশ্চিত যে, দিল্লি থেকে লিখে দেওয়া নিউজ করে যদি ভেবে থাকেন হাসনাত আব্দুল্লাহকে থামানো যাবে, তবে তারা এখনও ভুলের জগতে আছেন।"
প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে, শিরোনাম ছিল ‘হাসনাতের বিলাসী জীবনযাপন নিয়ে প্রশ্ন’ এবং প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছিল, এনসিপির বৈঠকে হাসনাতের বিলাসী জীবনযাপন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের কয়েকজন নেতা। তবে হাসনাত আব্দুল্লাহ তার পোস্টে এই প্রতিবেদনটি ভুল এবং ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ওই বৈঠকে এমন কোনো প্রশ্ন তোলা হয়নি এবং এমন বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
প্রথম আলো প্রতিবেদনের শেষে একটি সংশোধনী যোগ করা হয়েছে, যেখানে বলা হয় যে, প্রতিবেদনটির শিরোনাম এবং ভেতরের অংশবিশেষ পরিবর্তন করা হয়েছে। হাসনাতের মতে, এই সংশোধনিটিও সাংবাদিকতার ভুলের প্রতিফলন। তিনি বলেন, "এই ধরনের প্রতিবেদন আমাদের বিরুদ্ধে তথ্য সন্ত্রাস চালানোর একটি পরিকল্পনা, যাতে আমাদের চরিত্রে কলঙ্ক তোলা হয়।"
এমনকি হাসনাত আরও বলেন, "প্রথম আলো বরাবরই এই দেশের সৎ এবং দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছে এবং যারা ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদেরই আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। আমি সেই তালিকার সর্বশেষ সংযোজন।"
হাসনাত আব্দুল্লাহ তার পোস্টে বলেন, "আমাদেরকে মেরে না ফেলা পর্যন্ত ভারত, 'র' আর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমাদের এই লড়াই অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।" তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, তিনি এবং তার দলের নেতা-কর্মীরা যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রতিকূলতা এবং ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একসঙ্গে অবস্থান নিবেন এবং কখনোই পিছিয়ে আসবেন না।
এই ঘটনার পর, হাসনাত আব্দুল্লাহ তার অবস্থান আরও দৃঢ় করে জানিয়েছেন যে, যে কোনো ধরনের অবৈধ কার্যকলাপের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই এবং তিনি এই ধরনের অভিযোগকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন হিসেবে গ্রহণ করছেন।
তিনি আরও বলেন, "এনসিপি দলের মধ্যে এমন কোনো আলোচনা হয়নি এবং যে কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে, আমি রাজনৈতিক জীবন থেকে অবসর নেব।" এই চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে হাসনাত আব্দুল্লাহ তাঁর দল এবং জনগণের কাছে নিজের সততা ও নির্দোষিতা প্রমাণ করতে চান।
এই বিষয়টি এখন রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। হাসনাত আব্দুল্লাহর পক্ষ থেকে এমন চ্যালেঞ্জের পর, অনেকেই তার বক্তব্যকে সৎ এবং দৃঢ় বলে মনে করছেন, তবে কিছু মহল এর মধ্যেও বিতর্ক উত্থাপন করছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, এই বিতর্কের প্রভাব কী হতে পারে, তা আগামী দিনগুলোতেই পরিষ্কার হবে।