কালবৈশাখীর তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড শিমু-রেজা এম.পি কলেজ: আহত দুই শিক্ষক, বিজ্ঞান ভবনের চাল উড়ে গেল
এস এম তাজুল হাসান সাদ, উপকূলীয় প্রতিনিধি (সাতক্ষীরা)
সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার শিমু-রেজা এম.পি কলেজে গতকাল ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় প্রলয়ঙ্কারী কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কলেজের দুইজন শিক্ষক।
কলেজ কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা চলমান থাকায় সন্ধ্যায় অধ্যক্ষসহ সকল শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষক মিলনায়তনে অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ঠিক তখনই হঠাৎ শুরু হয় প্রচণ্ড কালবৈশাখী ঝড়। গাছের ডালপালা ভেঙে পড়তে থাকে। ২০১১ সালে নির্মিত কলেজের সেমিপাকা অফিস, প্রশাসনিক ভবন ও বিজ্ঞানাগার বাতাসের তীব্রতায় কেঁপে ওঠে।
ঝড়ের সময় শিক্ষক মিলনায়তনের সিলিং ভেঙে পড়ে সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রভাষক মো. রোকনুজ্জামান এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মো. মোহসীন আলী আহত হন। বাতাসের গতি ক্রমেই বাড়তে থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে গুরুত্বপূর্ণ অফিসিয়াল ফাইল বাইরে থাকায় বজ্রপাতের মধ্যেও কেউ তা রক্ষা করতে বাইরে বের হতে পারেননি।
প্রথম দফা ঝড় থামলে আহত দুই শিক্ষককে তাৎক্ষণিক প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই দ্বিতীয় দফা কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে এবং কলেজের বিজ্ঞান ভবনের (সেমিপাকা) টিনের ছাউনি বাতাসে উড়ে যায়। এ পর্যায়ে অবশ্য কেউ আহত হয়নি।
কলেজের অধ্যক্ষ জয়ন্ত কুমার ঘোষ বলেন, “হঠাৎ এই দুর্যোগ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে কলেজটি উন্নয়নের বাইরে রয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠাকালীন নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ভবনগুলো আজ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।”
তিনি জানান, বিজ্ঞান ভবনের চাল উড়ে যাওয়ায় কয়েক লক্ষ টাকার বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম খোলা আকাশের নিচে অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। অফিসিয়াল কাজে ব্যবহৃত একমাত্র ডেস্কটপ কম্পিউটারটিও বৃষ্টিতে ভিজে গেছে। দ্রুত সংস্কারের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অধ্যক্ষ আরো বলেন, “আমাদের কলেজে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী, দক্ষ শিক্ষক এবং বোর্ড ও জেলা পর্যায়ে চমৎকার ফলাফল থাকার পরও আমরা বৈষম্যের শিকার। আজও আমরা কোনো সরকারি একাডেমিক ভবন পাইনি।”
এদিকে কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইভা পারভীন ও দিপান্তী দে জানান, “আমাদের কলেজের শিক্ষার মান খুবই ভালো। কিন্তু পর্যাপ্ত অবকাঠামো না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে আগ্রহ দেখায় না। তাই জরুরি ভিত্তিতে একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ একান্ত প্রয়োজন।”