কা শ্মীর সমস্যা সমাধানে ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করব: ট্রাম্প..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কাশ্মীর নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই সরব হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যকার দশকব্যাপী বিরোধ মেটাতে সরাসরি মধ্যস্থতার আগ্রহ প্রকাশ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যুদ্ধবিরতির পর..

কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার ইচ্ছা, শান্তি প্রচেষ্টায় আশার আলো দেখালেন ট্রাম্প

দীর্ঘ দশকজুড়ে চলমান কাশ্মীর সমস্যায় নতুন মাত্রা যোগ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যে যুদ্ধাবস্থা তৈরি হয়েছিল, তা চার দিনের পাল্টাপাল্টি হামলার পর অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে গড়ায়। আর এই পটভূমিতেই ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন—তিনি দুই দেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চান কাশ্মীর সমস্যার স্থায়ী সমাধানে।

রবিবার (১১ মে) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “এখনই আগ্রাসন থামানো উচিত। দুই দেশের নেতারা যে বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন, তাতে আমি গর্বিত।”
তিনি বলেন, “এই সংঘর্ষে বহু নিরীহ মানুষের প্রাণহানি হতে পারত। কিন্তু ভারত ও পাকিস্তান যে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।”

ট্রাম্প আরও বলেন, “কাশ্মীর ইস্যুতে আমি আগ্রহী। কয়েক দশক ধরে চলা এই সমস্যার একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়া দরকার। যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত—ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানের রূপরেখা তৈরি করতে।”

তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা নিয়ে ভারত কতটা প্রস্তুত?

কাশ্মীর নিয়ে ভারত বরাবরই বলে আসছে, এটি একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয় এবং কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ তারা চায় না। ফলে ট্রাম্পের এই সরাসরি আগ্রহ দিল্লির কূটনৈতিক অঙ্গনে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে ইসলামাবাদ দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতার পক্ষে অবস্থান নেয়, বিশেষ করে কাশ্মীর ইস্যুতে।

যদিও ট্রাম্পের প্রস্তাবে এখনো পর্যন্ত ভারত কিংবা পাকিস্তান থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে কূটনৈতিক মহলে আলোচনা তুঙ্গে—যুক্তরাষ্ট্র কি এবার সত্যিই সক্রিয়ভাবে কাশ্মীর সংকটে ভূমিকা নিতে যাচ্ছে?

বাণিজ্য প্রসঙ্গেও ইঙ্গিত ট্রাম্পের

কাশ্মীর ইস্যুর বাইরে ট্রাম্প তাঁর পোস্টে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়েও মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “যদিও আলোচনা হয়নি, আমি এই দুটি দেশের সাথেই বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে যাচ্ছি।” তার এই বক্তব্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ককে কেন্দ্র করে শান্তিপ্রক্রিয়ায় গতি আনা সম্ভব হতে পারে।

যুদ্ধ থামাতে রাতভর আলোচনা

এর আগে শনিবার ট্রাম্প ঘোষণা দেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে। তিনি জানান, রাতভর চলা আলোচনার পর দুই দেশ দ্রুত যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লি থেকেও বিষয়টির আনুষ্ঠানিক নিশ্চিতকরণ আসে।

এছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, ৪৮ ঘণ্টার দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হন।

বিশ্লেষণ: মধ্যস্থতায় যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ কূটনৈতিক খেলায় নতুন মাত্রা

কাশ্মীর উপত্যকা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সংবেদনশীল এলাকা। দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চল নিয়ে দুই দেশেই রাজনৈতিক, সামরিক ও বেসামরিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের ইঙ্গিত দেয়, তেমনি আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতিতেও নতুন মোড় আনতে পারে।

এখন দেখার বিষয়, ভারত ও পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের এই মধ্যস্থতার আহ্বানে কীভাবে সাড়া দেয় এবং আদৌ কি কাশ্মীর সমস্যার একটি টেকসই ও যৌথ সমাধানের পথ খোঁজা সম্ভব হবে?

Tidak ada komentar yang ditemukan