চট্টগ্রাম থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে উঠেছে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)-র হুঙ্কারে। দলটির সহ-সভাপতি এবং মুখপাত্র রাশেদ প্রধান সরাসরি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে আক্রমণ করে বলেন, "জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে যারা দাঙ্গা বলে, তারা দেশের শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে।"
রাশেদ প্রধানের অভিযোগ, “আওয়ামী লীগ ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে দেশের মানুষের মনোজগতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ, অর্ধলাখ আহত সংগ্রামী জনগণের স্মৃতি মুছে দিতে চায় তারা। আর এই অপচেষ্টা চলেছে দীর্ঘদিন ধরে, কিন্তু জুলাই নিয়ে অপপ্রচার এখন শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
তিনি বলেন, “জয়, শেখ হাসিনার সন্তান, যারা ১৯ জুলাইয়ের আন্দোলনকে কালো অধ্যায় বলে অভিহিত করেছে, তারাও এই অপরাধে অংশীদার। ইতিহাসের বিকৃতি, গুজব ছড়ানো এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ চালানো—all orchestrated by the ruling party’s online operatives—তা আর কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট, রেল স্টেশন ও রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকাজুড়ে প্রচার-প্রচারণার মধ্য দিয়ে কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন পালন করে জাগপা। গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ এবং বিক্ষোভ মিছিল শেষে পথসভায় তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ নামক নিষিদ্ধ সংগঠনকে মনে রাখতে হবে—বাংলার মাটিতে অগাস্ট মাসের ৫ তারিখেই তাদের রাজনৈতিক কবর খোঁড়া হয়েছে।”
তিনি সরকারকে সতর্ক করে বলেন, “বিদেশের মাটিতে বসে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবেন না। আপনাদের প্রভু হিন্দুস্তানের আধিপত্য আর চলবে না। বাংলার মানুষ এখন জেগে উঠেছে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার দোসরদের বিচার হবে।”
এই সময় তিনি জাগপা’র পক্ষ থেকে আগামী ৬ আগস্ট ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বলেন, “ভারতীয় আগ্রাসন, দেশবিরোধী চুক্তি এবং ফ্যাসিবাদী ক্ষমতাকে রুখতে এবার দেশের প্রতিটি মানুষ মাঠে নামবে।”
পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাগপা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন প্রধান, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ শফিকুল ইসলাম, এ এম এম আনাছ, হাসমত উল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক শ্যামল চন্দ্র সরকার, শ্রমিক জাগপা সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন, যুব জাগপা সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু ও ওলিউল আনোয়ার প্রমুখ।
তাদের দাবি:
১. জুলাই আন্দোলনকে সরকারি ভাষায় ‘দাঙ্গা’ বলার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে
২. অপপ্রচার চালানো আওয়ামী লীগ কর্মীদের বিচার করতে হবে
৩. শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগ ও নতুন নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে
৪. ভারতীয় হস্তক্ষেপ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক অবস্থান নিতে হবে
রাশেদ প্রধান বলেন, “দেশ এখন চরম এক সন্ধিক্ষণে। একদিকে জনগণ, আরেকদিকে ফ্যাসিবাদ। আমরা জানি—বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কেউ থামাতে পারবে না। এই দেশের স্বাধীনতা আবার জনগণই ফিরিয়ে আনবে।”