close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি ইরানপন্থী শিয়া মিলিশিয়ার!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে জড়ায়, তবে মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন ঘাঁটি ধ্বংস করে দেবে ইরানপন্থী ইরাকি শিয়া যোদ্ধারা। হরমুজ ও বাব-আল-মানদেব প্রণালি বন্ধের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।..

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করে ইরান-সমর্থিত ইরাকি শিয়া মিলিশিয়া কাতায়েব হিজবুল্লাহ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যকার চলমান সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তবে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো তাদের হামলার প্রধান লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এক জোরালো বিবৃতিতে কাতায়েব হিজবুল্লাহর নিরাপত্তা প্রধান আবু আলী আল-আস্কারি বলেন,“আমরা আবারও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছি—যদি যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে জড়ায়, তবে উন্মাদ ট্রাম্প তার স্বপ্নে দেখা ট্রিলিয়ন ডলার এ অঞ্চল থেকে আদায় করার আশা চিরতরে হারাবেন।”

তিনি জানান, এই সম্ভাব্য যুদ্ধের জন্য তাদের “অপারেশনাল পরিকল্পনা সম্পূর্ণ প্রস্তুত” এবং হামলা যে কোনো সময় শুরু হতে পারে।

আবু আলী আল-আস্কারি বলেন, “নিঃসন্দেহে গোটা অঞ্চলের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো শিকারির অস্ত্রের নিশানায় পরিণত হবে। শুধু তাই নয়, পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরের মধ্যবর্তী হরমুজ প্রণালি এবং দক্ষিণে লোহিত সাগরের প্রবেশদ্বার বাব-আল-মানদেব প্রণালিও বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এই হুমকির বাস্তবায়ন হলে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক রুটগুলো কার্যত অচল হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন,“লোহিত সাগরের তীরবর্তী তেলবন্দরগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। আকাশে মার্কিন যুদ্ধবিমানের জন্য অপেক্ষা করছে একের পর এক চমক।”

বিশ্লেষকদের মতে, এসব অঞ্চল দিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ ব্যারেল তেল পরিবহন হয়। মিলিশিয়াদের এমন হুমকি বাস্তবায়িত হলে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে তীব্র সংকট সৃষ্টি হতে পারে।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, কাতায়েব হিজবুল্লাহ একটি ড্রোন হামলা চালিয়ে জর্দান-সিরিয়া সীমান্তবর্তী মার্কিন চৌকি ‘টাওয়ার ২২’-এ তিনজন সেনাকে হত্যা এবং ৩০ জনের বেশি সেনাকে আহত করেছে।

এই হামলার পরপরই ‘ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ইন ইরাক’ নামের একটি জোট ঘোষণা করে, তারা সীমান্তবর্তী বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে আল-রুকবান শরণার্থীশিবির অন্যতম, যা টাওয়ার ২২-এর নিকটেই অবস্থিত।

এই ঘটনাগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে, শিয়া মিলিশিয়ারা ইতোমধ্যেই সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

একদিকে যখন যুদ্ধের শঙ্কা তীব্রতর, তখন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন,“ইরানে সামরিক হামলার আগে আমি কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য আরও দুই সপ্তাহ সময় দিতে চাই।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি কূটনৈতিক চেষ্টা চালালেও, মিলিশিয়াদের মতো শক্তিগুলো কোনো আপস চায় না। তারা সরাসরি সংঘাতেই বিশ্বাসী এবং ইতিমধ্যেই হামলার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, যদি এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণরূপে জড়ায়, তাহলে তা হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা বিন্দু। পারস্য উপসাগর, হরমুজ প্রণালি এবং লোহিত সাগরের মতো অঞ্চলগুলোতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে তার প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতি ও জ্বালানি বাজারে।

মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে যুদ্ধের মেঘ গাঢ় হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি এই উত্তপ্ত খেলায় নাম লেখায়, তবে তা শুধু একটি অঞ্চল নয়—বরং গোটা পৃথিবীর স্থিতিশীলতাকেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে।

Tidak ada komentar yang ditemukan


News Card Generator