যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া বৈঠক: বিশ্বে শান্তির জন্য মস্কো ও ওয়াশিংটনের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বিশ্বের দুই বৃহত্তম শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে এক ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকটি সা
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বিশ্বের দুই বৃহত্তম শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে এক ঐতিহাসিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকটি সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে চলে, এবং বৈঠকের পর উভয় পক্ষ তাদের আলোচনার ফলাফল সম্পর্কে বেশ আশাবাদী। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বৈঠকটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফলপ্রসূ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, এটি একটি দীর্ঘ এবং কঠিন যাত্রার প্রথম ধাপ, যা ভবিষ্যতে আরো ভালো ফলাফল আনবে। ইউক্রেন যুদ্ধের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বিশ্বব্যাপী শঙ্কার সৃষ্টি করেছিল, এবং এই বৈঠকের মাধ্যমে দুই পক্ষই তাদের সম্পর্ক পুনর্স্থাপন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একত্রে কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। তবে, বৈঠকে ইউক্রেনের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিল না, যা নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিনিধি ইউরি উশাকোভ বলেছেন, তাদের আলোচনায় ইউক্রেন বিষয়েও কথা হয়েছে, এবং তারা সমঝোতার প্রক্রিয়া শুরুর ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয় পক্ষই একমত হয়েছেন যে তারা দ্রুত তাদের দূতাবাসে কর্মীদের ফিরিয়ে নিয়ে আসবে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করবে। এছাড়া, দুই দেশের মধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে, যা ইউক্রেন শান্তি আলোচনা সহায়তার জন্য কাজ করবে। দুই দেশই পরস্পরের দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত নিয়োগের ব্যাপারে সম্মতি জানিয়েছে, এবং দূতাবাসের ব্যাংক লেনদেন সহ অন্যান্য কূটনৈতিক প্রতিবন্ধকতাগুলি দূর করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, এই বৈঠকটি একটি দীর্ঘ এবং কঠিন যাত্রার প্রথম পদক্ষেপ, এবং তারা মস্কোকে একটি ‘ন্যায্য ও স্থায়ী’ ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি জানান, ইউক্রেনের প্রতিনিধি এবং ইউরোপের দেশগুলোকে আলোচনার বাইরে রাখা হয়নি, বরং তাদের মতামত ও অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে চুক্তি করা হবে। রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বৈঠকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতৈক্য প্রকাশ করেছেন: প্রথমত, দুই দেশের দূতাবাসে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ, দ্বিতীয়ত, ইউক্রেন বিষয়ক আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু, এবং তৃতীয়ত, দুই দেশের মধ্যে পূর্ণমাত্রায় সহযোগিতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। এছাড়া, রাশিয়ান ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিল দমিত্রিয়েভ বৈঠকটিকে "গঠনমূলক" হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং জানিয়েছেন যে দুই পক্ষ একে অপরকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে। বৈঠকে হাস্যরসের মেজাজও ছিল, যা আলোচনার পরিবেশকে আরও ফলপ্রসূ করেছে। বৈঠকটিতে রাশিয়ার পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, প্রেসিডেন্ট পুতিনের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকোভ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ এবং মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, সৌদি আরবের পক্ষ থেকে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল–সৌদ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুসায়েদ বিন মোহাম্মদ আল–আইবান বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা বিশ্বব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতার দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
No comments found